চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার গণ্ডামারায় নির্মাণাধীন কয়লাবিদ্যুৎকেন্দ্রের শ্রমিকদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে করা রিটের উপর সোমবার হাইকোর্টে শুনানি হতে পারে।
রবিবার রিট আবেদনটি শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হলে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ রিটটি শুনানির জন্য সোমবার কার্যতালিকায় আসবে বলে জানায়।
আরও পড়ুন: বাঁশখালীতে পুলিশ-শ্রমিক সংঘর্ষ: ২ মামলায় আসামি আড়াই হাজার
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) আইনজীবী সৈয়দা নাসরিন রিট আবেদনটি শুনানির জন্য আদালতের কাছে উপস্থাপন করেন।
আসকের পক্ষে এই আইনজীবী ২২ এপ্রিল হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি দায়ের করেন। রিটে হতাহতের প্রত্যেক পরিবারকে আপাতত ২০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেয়া এবং নিহত ও আহত শ্রমিকদের একটি তালিকা হাইকোর্টে দাখিলের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাঁশখালীতে এস আলম বিদ্যুৎকেন্দ্রে পুলিশ-শ্রমিক সংঘর্ষে নিহত বেড়ে ৫
এছাড়া হতাহতের ওই ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা কেন নেয়া হবে না এবং নিহতদের পরিবারকে ৩ কোটি টাকা ও আহতদের পরিবারকে ২ কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারির আবেদন জানানো হয়েছে।
রিটের বিষয়ে অ্যাডভোকেট সৈয়দা নাসরিন বলেন, ‘বাঁশখালীতে হতাহতের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে এবং নিহত ও আহত শ্রমিকদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিয়ে এর আগে একটি লিগ্যাল নোটিশ দেয়া হয়। কিন্তু সে নোটিশের জবাব না পাওয়ায় হাইকোর্টে রিটটি করা হয়। স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, শিল্প সচিব, বাণিজ্য সচিব, পুলিশ মহাপরিদর্শকসহ সংশ্লিষ্টদের এই রিটে বিবাদী করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাঁশখালীতে শ্রমিকদের প্রাণহানি: বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে রিট
চট্টগ্রামের বাঁশখালীর গণ্ডামারায় এস আলম গ্রুপের নির্মাণাধীন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের শ্রমিকদের বিক্ষোভে গত ১৭ এপ্রিল পুলিশ গুলি চালালে ৫ শ্রমিক নিহত এবং কয়েক ডজন শ্রমিক আহত হন। ওই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ আরও ২ শ্রমিকের বুধবার মৃত্যু হয়।
হতাহতের ঘটনায় এসএম পাওয়ার প্লান্টের পক্ষে একটি ও পুলিশ বাদী হয়ে আরেকটি মামলাটি করেছে। ‘বিদ্যুৎকেন্দ্রের পক্ষে করা মামলায় ২২ জনের নাম উল্লেখ ছাড়াও অজ্ঞাত আরও ১ হাজার ৪০ জনকে আসামি করা হয়েছে। আর পুলিশের করা মামলায় অজ্ঞাত দুই থেকে আড়াই হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে।
এর আগে ২০১৬ সালের এপ্রিলে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণের পক্ষে ও বিপক্ষে থাকাদের মধ্যে সংঘর্ষে ৪ জন নিহত হয়। এছাড়াও ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটির বিষয়ে মতবিনিময়সভা চলাকালে সংঘর্ষে ১ জন নিহত হন।