কক্সবাজারের মহেশখালীতে দ্বিতীয় এলএনজি টার্মিনাল স্থাপনের জন্য সরকারের চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে স্থানীয় সামিট গ্রুপ।
বুধবার (৬ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলার এই প্রস্তাবে অনুমোদন দেয় সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
এই চুক্তির আওতায় সামিট গ্রুপের আমদানি করা তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) পুনরায় গ্যাসে রূপান্তরের জন্য এলএনজি টার্মিনাল হিসেবে নতুন ভাসমান স্টোরেজ ও রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিট স্থাপন করবে।
অনুমোদন অনুযায়ী, সামিট গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান সামিট অয়েল অ্যান্ড শিপিং কোম্পানি লিমিটেড ১৫ বছর মেয়াদি টার্মিনাল ইউজ এগ্রিমেন্ট (টিইউএ) এবং ইমপ্লিমেন্টেশন এগ্রিমেন্ট (আইএ) সই করবে। এই চুক্তির আওতায় প্রতিদিন ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট (এমএমসিএফডি) ক্ষমতাসম্পন্ন এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন করবে গ্রুপটি। পুনরায় গ্যাসে রূপান্তরের খরচ পড়বে ৩ কোটি ৩১ লাখ টাকা।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে বুধবার (৬ ডিসেম্বর) এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
চলতি বছরের ১৪ জুন অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির নীতিগত অনুমোদনের পর এই অনুমোদন দেওয়া হয়।
এটি হবে দেশের তৃতীয় এলএনজি টার্মিনাল। কক্সবাজারের মহেশখালীতে যুক্তরাষ্ট্রের এক্সেলেরেট এনার্জি কর্তৃক ৫০০ এমএমসিএফডি ক্ষমতাসম্পন্ন এবং একই এলাকায় একই ক্ষমতাসম্পন্ন আরও একটি এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন করেছে সামিট গ্রুপ।
কাতার ও ওমান থেকে পেট্রোবাংলার আমদানি করা এলএনজি পুনরায় গ্যাসে রূপান্তর করার জন্য এক্সেলেরেট এনার্জি ও সামিট যথাক্রমে ২০১৮ ও ২০১৯ সাল থেকে সরকারকে এফএসআরইউ পরিষেবা দিয়ে আসছে।
আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক স্পট মার্কেট থেকে ২ কার্গো এলএনজি আমদানি করবে সরকার
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ সামিট গ্রুপের প্রস্তাবটি বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহের দ্রুত বৃদ্ধি (বিশেষ) আইন-২০১০ এর অধীনে সরাসরি ক্রয় প্রক্রিয়া হিসেবে উত্থাপন করে, যা সরকারকে প্রতিযোগিতামূলক নিলাম প্রক্রিয়া ছাড়াই চুক্তি প্রদানের অনুমতি দেয়।
এর আগে সিসিইএ’র অনুমোদিত প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, প্রস্তাবিত সামিটের টার্মিনালের পুনঃগ্যাসিফিকেশন ক্ষমতা হবে প্রতিদিন ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি (এমএমসিএফডি)। কিন্তু এখন সামিট ৬০০ এমএমসিএফডি ক্ষমতাসম্পন্ন এলএনজি টার্মিনাল স্থাপনের চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে।
পেট্রোবাংলা ৩০০০ এমএমসিএফডি গ্যাস সরবরাহ করছে। এর মধ্যে প্রায় ২৩০০ এমএমসিএফডি স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হয়। আর ৭০০ এমএমসিএফডি আমদানি করা হয়।
আরও পড়ুন: রাশিয়া থেকে এলএনজি, গম, সার সরবরাহের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা চলছে: ল্যাভরভ
ফলে ৪ হাজার এমএমসিএফডির চাহিদা মেটাতে দেশে প্রতিদিন প্রায় এক হাজার মিলিয়ন ঘনফুট (এমএমসিএফডি) গ্যাসের ব্যাপক ঘাটতি দেখা দিচ্ছে।
সম্প্রতি পেট্রোবাংলা কাতার ও ওমানের সঙ্গে দুটি নতুন চুক্তি সই করেছে। এই চুক্তির আওতায় ২০২৬ সাল থেকে আরও এলএনজি সরবরাহ পাওয়া যাবে। এছাড়া ২০২৬ সাল থেকে অতিরিক্ত এলএনজি আমদানির জন্য এক্সেলরেট এনার্জির সঙ্গে ১৫ বছর মেয়াদি নতুন চুক্তিও সই হয়েছে।
পেট্রোবাংলার পৃথক একটি প্রস্তাবে সুইজারল্যান্ডের টোটাল এনার্জিগ্যাস অ্যান্ড পাওয়ার লিমিটেড থেকে ৬৯১ কোটি ৭৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ'র এলএনজি কার্গো আমদানির অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
আরও পড়ুন: পেট্রোবাংলার সঙ্গে এক্সেলারেট এনার্জির এলএনজি সরবরাহ চুক্তি সই