রোহিঙ্গাদের নিজেদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে নিরাপদ, স্বেচ্ছায় ও স্থায়ী প্রত্যাবাসনে জরুরি পদক্ষেপ নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর প্যান-প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির (বিডিআরসিএস) সপ্তম অংশীদারি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ মানবিক কারণে নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের জন্য এর সীমান্ত খুলে দিয়েছে। বর্তমানে দেশটি মিয়ানমার থেকে প্রায় ১ দশমিক ২ মিলিয়ন জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মানুষকে আশ্রয় দিচ্ছে। এছাড়া তাদের খাদ্য ও অন্যান্য প্রয়োজনীয়তা সরবরাহ করছে।
আরও পড়ুন: ৪৩তম আসিয়ান সম্মেলনে যোগ দিতে জাকার্তার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন রাষ্ট্রপতি
তিনি আরও বলেন, ‘এই সংকটের ভার যে কেবল আমাদের কাঁধেই বর্তাবে না তা বোঝা অপরিহার্য। যদিও আমরা তাদের সমর্থন দিয়ে যাচ্ছি। এখন সময় এসেছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মিয়ানমারে এই সংকটের একটি স্থায়ী সমাধান খুঁজে বের করার।’
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সতর্ক করে বলেছেন যে- রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, স্বেচ্ছায় ও স্থায়ী প্রত্যাবাসন শুরু করতে বিলম্ব এবং মানবিক সহায়তার অভাব সমগ্র অঞ্চলকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারে।
রাষ্ট্রপতি জলবায়ু পরিবর্তনকে একটি বৈশ্বিক সংকট হিসেবে উল্লেখ করেছেন, যা বৈশ্বিক সহযোগিতার দাবি রাখে।
তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমাতে এবং বাংলাদেশের মতো ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোকে সহায়তা প্রদানের প্রতিশ্রুতিকে সম্মান করার আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রপতি গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়ন শুরু হয় ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে যখন এই সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে এবং 'ডিজিটাল বাংলাদেশ'-এর মতো কৌশল গ্রহণ করে; 'রূপকল্প-২০২১ ও রূপকল্প-২০৪১' এবং 'স্মার্ট বাংলাদেশ' যা আমাদের অর্জিত উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধির অনুঘটক হিসেবে কাজ করছে।’
তিনি বলেন, দারিদ্র্য ও প্রতিকূলতাকে পেছনে ফেলে উন্নয়নের যাত্রায় বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়েছে। স্বাস্থ্যসেবা এবং শিক্ষার মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেশটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে।
আরও পড়ুন: ১২ দিনের সফর শেষে দেশে ফিরেছেন রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন
বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিকে আশা, সহানুভূতি ও নিঃস্বার্থতার বাতিঘর আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, এটি মানবতার মূল মর্মকে প্রতিনিধিত্ব করে।
তিনি আরও বলেন, ‘সপ্তম অংশীদারিত্ব সভার মাধ্যমে, আমরা কেবল রেড ক্রিসেন্টের স্থায়ী চেতনাই উদযাপন করছি না, বরং অগণিত ব্যক্তি, সংস্থা এবং স্বেচ্ছাসেবকদের সম্মিলিত প্রচেষ্টাকে উদযাপন করছি যারা এটি সম্ভব করেছে।’
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন- বিডিআরসিএস মহাসচিব শফিকুল আলম।
বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুল ওয়াহাদ রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনকে সম্মানসূচক ক্রেস্ট প্রদান করেন।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান, রেড ক্রসের ইন্টারন্যাশনাল কমিটির বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের প্রধান অ্যাগনেস ধুর, আঞ্চলিক পরিচালক (এশিয়া-প্যাসিফিক) ইন্টারন্যাশনাল রেড ক্রস অ্যান্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি আলেকজান্ডার ম্যাথাউও বক্তব্য দেন।