বিকাল সাড়ে ৪টায় বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর ক্ষণগণনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত হওয়ার পর, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের প্রতীকী আবহ তৈরি করা হবে। বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে প্রতীকী বিমান অবতরণ ছাড়াও সংবর্ধনা এবং গার্ড অব অনার দেয়ার ঐতিহাসিক মুহূর্তগুলো দেখতে পাবেন দর্শকরা।
আনুষ্ঠানিকভাবে মুজিব বর্ষের ক্ষণগণনা উদ্বোধন এবং লোগো উন্মোচন করে বক্তব্য রাখবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সম্পৃক্ত করে বছরব্যাপী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন কার্যক্রম শুরু হবে আগামী ১৭ মার্চ থেকে।
দর্শকরা অনলাইনে তাদের নাম নিবন্ধন করছেন উল্লেখ করে গত ১ জানুয়ারি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানান, প্রায় ২ হাজার অতিথি এবং ১০ হাজার দর্শককে এই অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হবে।
১২টি সিটি করপোরেশনের ২৮টি স্থানে, ৫৩ জেলায় এবং টুঙ্গিপাড়া ও মুজিবনগরে মোট ৮৩টি ক্ষণগণনার ঘড়ি বসানো হবে।
১০ জানুয়ারি থেকে ক্ষণগণনা শুরু হওয়া ‘মুজিব বর্ষ’ চলাকালীন ধারাবাহিক বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেয়ার জন্য বিশ্বনেতাদের একটি দীর্ঘ তালিকা পেয়েছে বাংলাদেশ, যা দেশের ইতিহাসে আরেকটি মাইলফলক তৈরি করেছে।
আন্তর্জাতিক অতিথি
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা- ওআইসি’র মহাসচিব ড. ইউসুফ এ আল-ওথাইমিন, ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জী, ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি সোনিয়া গান্ধী, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, আবুধাবির ক্রাউন প্রিন্স শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান, জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি-মুন, ভুটানের রাজা জিগমেখেসার নামগিয়েল ওয়াংচাক এবং ইউনেস্কোর সাবেক মহাপরিচালক ইরিনা বোকোভা আমন্ত্রিত বিশ্ব নেতাদের মধ্যে রয়েছেন।
বছরব্যাপী কর্মসূচি
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা করেন যে, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ১৭ মার্চ পর্যন্ত দেশজুড়ে ‘মুজিববর্ষ’ পালিত হবে।
সরকার ও দলীয় স্তরে গণমানুষের অংশগ্রহণের পাশাপাশি দেশে এবং বিদেশে বছরব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেবে বাংলাদেশের বিদেশি মিত্ররাও।
২০২১ সালে দেশের স্বাধীনতার স্বর্ণজয়ন্তী উদযাপনের ধারাবাহিকতায় পালিত হবে ‘মুজিববর্ষ’।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উদযাপন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আবদুল মোমেন জানান, সরকার বিশ্বজুড়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ছড়িয়ে দিতে চায় এবং বিদেশের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর চেয়ার চালু করা, বঙ্গবন্ধুর নামানুসারে রাস্তার নামকরণসহ ২৬১টি কর্মসূচি গ্রহণ করেছে বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের ৭৭টি দূতাবাস।
বাংলাদেশকে নতুনভাবে উপস্থাপন করা
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য সাফল্য তুলে ধরে দেশকে বিশ্বজুড়ে নতুনভাবে উপস্থাপন করা হবে। আমরা আমাদের সাফল্য নিয়ে বিদেশে বাংলাদেশকে ইতিবাচকভাবে তুলে ধরব। এটি একটি সম্ভাবনা এবং উদীয়মান অর্থনীতির দেশ।’
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, বিশ্বজুড়ে অগ্রগতি ধরে রাখতে বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসগুলোর সাথে নিবিড়ভাবে এবং দলবদ্ধ হয়ে কাজ কাজ করার ওপর জোর দেবে সরকার।
তিনি বলেন, ‘সামনে আমাদের অনেক কাজ আছে এবং আমরা অনেক কর্মসূচি গ্রহণ করছি।’
বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির কথা তুলে ধরে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, বিশ্ব এখন অনেক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নেতৃত্ব প্রত্যাশা করে।
বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।