মোংলা ও চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে পণ্য পরিবহনের জন্য ভারতকে প্রতি টন ২২০ টাকা ফি (ট্রান্সশিপমেন্ট ফি, নিরাপত্তা এবং প্রশাসনিক চার্জ) দিতে হবে।
এছাড়া প্রতি চালান ৩০ টাকা ডকুমেন্ট প্রসেসিং ফি, প্রতি কিলোমিটার কন্টেইনার স্ক্যানিং ফি ২৫৪ টাকা এবং এসকর্ট চার্জ ৮৫ টাকা দিতে হবে।
সোমবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এক প্রজ্ঞাপনে বলেছে, চুক্তি অনুযায়ী নির্দিষ্ট রুটের বাইরে অন্য রুটে ট্রানজিট চলাকালীন পণ্য পরিবহন করা যাবে না।
আরও পড়ুন: ১ কোটি ১৬ লাখ মানুষের করযোগ্য আয় থাকলেও অধিকাংশই রিটার্ন জমা দেয় না: এনবিআর কর্মকর্তা
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ভারত থেকে পণ্য পরিবহনের জন্য চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহারের চুক্তির অধীনে ভারতীয় পণ্যের ট্রানজিট-ট্রান্সশিপমেন্ট সংক্রান্ত একটি স্থায়ী আদেশ জারি করেছে। স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) দ্বারা ট্রানজিট ফি-রুট নির্ধারণ করা হয়েছে।
স্থায়ী আদেশে বলা হয়েছে, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের ট্রানজিট অপারেটর হিসেবে নিবন্ধনের জন্য মোংলা ও চট্টগ্রাম কাস্টমসের কাছে আবেদন করতে হবে। আবেদন যাচাইয়ের পরে ফলাফল সন্তোষজনক হলে যোগ্য সিএন্ডএফ এজেন্টদের ১০ হাজার টাকা (অফেরতযোগ্য) ট্রেজারি চালান,১০ লাখ টাকার একটি নিঃশর্ত ব্যাংক গ্যারান্টি এবং ৫০ লাখ টাকার ঝুঁকি বন্ড জমা দিতে হবে।
ট্রানজিট-ট্রান্সশিপমেন্ট পণ্য সাত দিনের মধ্যে বাংলাদেশের ভৌগলিক সীমানা অতিক্রম করতে ব্যর্থ হলে অপারেটরকে পণ্যের জন্য শুল্ক-কর জরিমানা দিতে হবে।
এনবিআর এর প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, প্রাকৃতিক কারণে পণ্য গন্তব্যে পৌঁছাতে না পারলে বা যানবাহন বিকল হয়ে গেলে সংশ্লিষ্ট ভ্যাট কমিশনারেট অফিসে বিস্তারিত জানিয়ে চিঠি পাঠাতে হবে।
আদেশে আরও বলা হয়েছে যে প্রতিটি ট্রানজিট-ট্রানশিপমেন্ট চালানের স্ক্যানিং করা হবে। তারপর ইলেকট্রনিক সিল লক ইনস্টল করা হবে। স্ক্যানিংয়ে অসঙ্গতি পাওয়া গেলে পণ্যগুলোর একটি ম্যানুয়াল পরিদর্শন করা হবে।
২০২০ সালের জুলাই মাসের চুক্তির অধীনে প্রথম ট্রায়াল রান লোহার রড এবং ডাল বোঝাই চারটি কন্টেইনারে কলকাতার হলদিয়া বন্দর থেকে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে পরিবহন করা হয়েছিল।
ভারত-বাংলাদেশ প্রোটোকল রুটের মাধ্যমে চট্টগ্রাম এবং মোংলা বন্দরকে উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোর সঙ্গে সংযুক্ত করার জন্য চতুর্থ এবং চূড়ান্ত ট্রায়াল রান ২০২২ সালের ৭ নভেম্বর শেষ হয়েছিল।
বাংলাদেশের নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী সম্প্রতি সাংবাদিকদের বলেছেন, ভারত সিঙ্গাপুর ও কলম্বো বন্দরের বিকল্প হিসেবে মোংলা ও চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করতে চায়।
প্রতিবেশী দেশটি নিয়মিত ট্রানজিটের জন্য আগ্রহী কারণ এর যানবাহনগুলো কলকাতা থেকে গুয়াহাটি হয়ে আগরতলা পর্যন্ত পণ্য পরিবহনের জন্য এক হাজার ৬৫০ কিলোমিটারের বেশি ভ্রমণ করতে হয়।
আশা করা হচ্ছে যে এই পদক্ষেপটি ভারত-বাংলাদেশ প্রোটোকল রুটের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ জলপথে উত্তর-পূর্বে বাণিজ্যের পরিমাণ বাড়াতে এবং মালবাহী খরচ কমাতে সাহায্য করবে।
এতদিন পূর্বের রাজ্যগুলোতে পণ্য পরিবহনে ভারত অনেক সময় লাগত। বাংলাদেশের এই দুই বন্দর দিয়ে যাতায়াত করলে ভারতের সময় ও খরচ দুটোই কমবে।
আরও পড়ুন: আয়কর রিটার্ন জমা দেয়ার সময় ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ল: এনবিআর
আয়কর রিটার্ন জমা দেয়ার সময় ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ল: এনবিআর