পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে আট অক্টোবর আত্মহত্যার চেষ্টা করা ১৭ বছর বয়সী গর্ভবতী কিশোরী বৃহস্পতিবার এক মৃত শিশুর জন্ম দেয়ার পর মৃত্যুবরণ করেছে।
নেত্রকোনার রহিমপুর গ্রামের আরিফুল ইসলামের মেয়ে সুরাইয়া নেওয়াজ লাবণ্য ঢাকার শেখ হাসিনা ন্যাশনাল বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে সন্ধ্যা ৭ টা ৪০ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে বলে জানান হাসপাতালের আবাসিক ডাক্তার পার্থ শঙ্কর পাল।
তিনি আরও জানান, এর আগে সকাল সাতটায় সুরাইয়া এক মৃত মেয়ে সন্তানের জন্ম দেন।
আরও পড়ুন: স্বামীর লাথিতে অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর মৃত্যু!
ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক ডা. আইয়ুব হোসেন বলেন, ছয় মাসের গর্ভবতী কিশোরীর শরীরের অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিলো কেননা তার শরীরের ৯০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল।এই কারণে তার সন্তান জন্মের আগেই তার গর্ভে মারা যায়।
সুরাইয়ার বাবা আরিফুল জানান, গত বছর ২ অক্টোবর তিনি তার মেয়েকে ময়মনসিংহ জেলার ধোবাউড়া উপজেলার প্রাইভেটকার চালক শাহিন আলমের সঙ্গে বিয়ে দেন যার সঙ্গে সুরাইয়া প্রেমের সম্পর্ক ছিল।
যেহেতু, সুরাইয়া ময়মনসিংহে তার শ্বশুরবাড়ির সাথে থাকত কিছুদিন পর তারা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে। তারা ব্যবসার জন্য যৌতুক হিসেবে দুই লাখ টাকা দাবি করে।
আরও পড়ুন: কোলের শিশুসহ ট্রেনের নিচে গৃহবধূর আত্মহত্যার চেষ্টা
১ আগস্ট, আরিফুল ময়মনসিংহ গিয়ে সুরাইয়াকে অসুস্থ দেখলে তাকে তার সাথে নেত্রকোণায় ফিরিয়ে আনেন।
তার পরেও তার স্বামী শাহিন তাকে প্রায়ই ফোনে গালিগালাজ করত।৮ অক্টোবর এক পর্যায়ে সুরাইয়া তার বাবার বাড়ির রান্নাঘরে পেট্রোল ঢেলে তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। সুরাইয়ার কান্না শুনে তার দাদী তাকে স্থানীয়দের সহায়তায় উদ্ধার করে ময়মনসিংহ সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়।
পরের দিন তার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে শেখ হাসিনা প্লাস্টিক অ্যান্ড বার্ন ইনস্টিটিউটে স্থানান্তর করা হয়।
সুরাইয়ার বাবা দাবি করেছেন সুরাইয়ার স্বামী এবং তার পরিবার তার মেয়ের মৃত্যুর জন্য দায়ী। আরিফুল ইসলাম জানান, তিনি সুরাইয়ার শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে মামলা করবেন।
আরও পড়ুন: চাটখিলে বজ্রপাতে গৃহবধূর মৃত্যু
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানান, সুরাইয়ার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।