বাংলাদেশে শ্রীলঙ্কার মতো পরিস্থিতি হবে না উল্লেখ্য করে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেছেন, বাংলাদেশ এমন একটি দেশ যেটি সাবধানে ঋণ গ্রহণ এবং শক্তিশালী বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের সঙ্গে ঋণ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে ‘অত্যন্ত ভালো’ করছে।
রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেন, মূলত বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা নয় তবে দেশটির বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ রয়েছে।
বাংলাদেশ চীন থেকে অল্প পরিমাণ ঋণ নিয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এর মানে এই নয় যে বাংলাদেশের অর্থনীতি মুদ্রাস্ফীতি বা ক্রমবর্ধমান খাদ্য মূল্যের মতো চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে না।
জাতীয় প্রেসক্লাবে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ডিক্যাব) আয়োজিত ‘ডিক্যাব টক’-এ প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের উন্নয়নে ‘বিশ্বস্ত অংশীদার’ থাকবে যুক্তরাষ্ট্র: পিটার হাস
জাতীয় নির্বাচন
এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, তিনি বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচনের গুরুত্বের কথা বলছেন যেখানে জনগণের স্বাধীনভাবে তাদের নেতা নির্বাচন করার অধিকার ও ক্ষমতা রয়েছে। তবে অবাধ নির্বাচনের প্রয়োজনীয় শর্তগুলো কীভাবে তৈরি করা হবে তা বাংলাদেশের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, সহিংসতাহীনতা ও নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করা বাংলাদেশ সরকার, বাংলাদেশের জনগণ, গণমাধ্যম এবং সুশীল সমাজের দায়িত্ব।
আরও পড়ুন: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের উদ্বেগ
আইপিইএফ ও বাংলাদেশ
এক প্রশ্নের জবাবে হাস বলেন, সম্প্রতি চালু হওয়া ইন্দো-প্যাসিফিক ইকোনমিক ফ্রেমওয়ার্ক ফর প্রসপারটি (আইপিইএফ) এ যোগদানের সুযোগ থাকবে অন্যান্য দেশের জন্য।
আইপিইএফ নিয়ে মার্চ মাসে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে এবং রাষ্ট্রদূত আশা প্রকাশ করেছেন যে বাংলাদেশ এটি নিবিড়ভাবে অনুসরণ করবে।
অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সম্প্রতি ১২টি ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশের সঙ্গে একটি নতুন অর্থনৈতিক চুক্তি করেছেন। দেশগুলো হলো, অস্ট্রেলিয়া, ব্রুনাই, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, জাপান, কোরিয়া, মালয়েশিয়া, নিউজিল্যান্ড, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনাম।বিশ্ব জিডিপির ৪০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে দেশগুলো।
এলিট ফোর্স র্যাবের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে মার্কিন দূত বলেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেন এটা স্পষ্ট করেছেন যে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির কেন্দ্রে রয়েছে মানবাধিকার সমুন্নত রাখা।
আরও পড়ুন: শাস্তি নয়, সতর্ক করতে নিষেধাজ্ঞা: মার্কিন রাষ্ট্রদূত
হাস বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র র্যাবের জবাবদিহিতা চায় এবং সম্ভাব্য মানবাধিকার লঙ্ঘন এড়াতে চায়। ভবিষ্যতে যাতে মানবাধিকার লঙ্ঘন আর না হয় তা নিশ্চিত করার প্রচেষ্টাস্বরূপ এই সিদ্ধান্ত।
তিরি আরও বলেন, এটি অবশ্যই পালনীয় এমন কোনো সুনির্দিষ্ট বিষয়ের তালিকা প্রদান নয়। কিন্তু মানবাধিকারের প্রতি অঙ্গীকার এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে জবাবদিহিতার প্রতি প্রতিশ্রুতির অংশ।
ডিক্যাব সভাপতি রেজাউল করিম লোটাস অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক একেএম মঈনুদ্দিন।