প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা ১৯৭৭ সালে অবৈধ কোর্ট মার্শালের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর শতাধিক সদস্য হত্যার সঙ্গে জড়িত, তারা তাদের অপরাধের শাস্তি পাচ্ছে।
তিনি বলেন, ২০১৩-১৫ সালে বিএনপি ও জামায়াতের আন্দোলনের নামে অগ্নিসংযোগ ও অগ্নিসন্ত্রাসের অপরাধীদেরও শাস্তি দেওয়া হচ্ছে।
মঙ্গলবার তিনি তার সরকারি বাসভবন গণভবনে এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘যারা অন্যায়ের সঙ্গে জড়িত তারা শাস্তি পেয়েছে, শাস্তি পাচ্ছে এবং শাস্তি পাবে।’
এসময় তৎকালীন সামরিক শাসক জেনারেল জিয়াউর রহমানের শাসনামলে ১৯৭৭ সালে অবৈধ কোর্ট মার্শালের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সদস্যদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে বিএনপি-জামায়াত জোটের অগ্নিসংযোগের সন্ত্রাসের শিকার এবং স্বজনরাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, তিনি এবং তার ছোট বোন নিহতদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি সহানুভূতিশীল, কারণ তিনি এবং তার ছোট বোন ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট এক দিনে বাবা, মা, ভাই, ভাবি এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের হারিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ ও এর জনগণের জন্য আজীবন কষ্ট সহ্য করেছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘আমার একমাত্র লক্ষ্য এই দেশের মানুষ যাতে ভাল থাকে তা নিশ্চিত করা।’
আরও পড়ুন: সামরিক শাসন নয়, রাজনৈতিক নেতৃত্ব বাংলাদেশের সমৃদ্ধির চাবিকাঠি: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, দেশ যখন অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে তখন মার্কেটে অগ্নিসংযোগ ও অগ্নিসন্ত্রাসের ঘটনায় নিরীহ মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়ছে।
তিনি বলেন, ‘যারা এটা করছে তারা পুরো জাতির সঙ্গে বৈরিতা করছে। আমি মনে করি আল্লাহও এটা সহ্য করবেন না।’
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াতের কার্যক্রম পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর মতোই বর্বর ছিল।
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান হাসতে হাসতে মৃত্যুদণ্ডের রায় লিখতেন।
তিনি আরও বলেন, এরপর জিয়ার স্ত্রী এবং তারপর তাদের ছেলেরা অগ্নিসংযোগের আশ্রয় নেয়, কারণ তারা দেশ ও জনগণের কোনো মঙ্গল চায় না।
নিহতদের পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের কষ্ট তিনি বুঝতে পারেন বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি সবসময় আপনার পাশে আছি, আমি আপনাদের কষ্ট বুঝতে পারি।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ভুক্তভোগী সার্জেন্ট দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী নুরুন্নাহার বেগম ও সার্জেন্ট মোরশেদুল আলমের মেয়ে মাকসুদা পারভিন।
স্বজনরা বক্তব্য দেওয়ার সময় হৃদয় বিদারক পরিস্থিতি বিরাজ করে।
অনুষ্ঠানে অগ্নিসংযোগের শিকার উপ-পরিদর্শক মকবুল হোসেন ও মোহাম্মদ সালাউদ্দিন ভূঁইয়া তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন।
এই বিষয়ে দুটি পৃথক তথ্যচিত্রও প্রদর্শন করা হয় অনুষ্ঠানে।
প্রধানমন্ত্রী ভুক্তভোগী ও নিহতের স্বজনদের ঈদ উপহার দেন।