আরও পড়ুন: ‘সারাদিন কষ্টের পরে একটু শান্তিতে পাকা ঘরে ঘুমাতে পারবো’
কালীগঞ্জ উপজেলার চাঁপারতল গ্রামের আকাশ ফিলিং স্টেশনের পাশের একটি বাড়িতে বসবাস গৌরদাসের। বাড়ির ভেতর গিয়ে দেখা যায় একটি ঘর একবারেই ভেঙে পড়েছে আর একটি ঘরের দেয়াল ধসে আছে। তার পাশেই ছেঁড়া কাপড়, ফুটো টিন, বাঁশ আর খড়ের জোড়াতালি দেয়া ঘরে থাকেন গৌরদাস।
পেটের তাগিদে এ বৃদ্ধ বয়সে তিনি সারা দিন ঘুরেন অন্যের দুয়ারে দুয়ারে। আর জরাজীর্ণ বসতঘরে প্রাকৃতিক দুর্যোগের আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটে তার। জনপ্রতিনিধিরা কেউ রাখেন না খোঁজ তার, ভাগ্যে জোটেনি মুজিববর্ষের একটি ঘর। ভাগনে বিরু রায়ের দেয়া ঝুপড়ি ঘরটিই মাথা গোঁজার আশ্রয় তার। নিজের বলতে নেই কিছুই।
আরও পড়ুন: ‘স্বপ্নেও কল্পনা করিনি ইটের একখানা নতুন ঘর পাবো’
গৌরদাস বলেন, ‘রাতে আতঙ্কে থাকি, কখন যে ঝড় আসে আর কখন যে বৃষ্টি হয়। দেখার কেউ নেই, খুব কষ্টে আছি। মেম্বার ও চেয়ারম্যানের কাছে গেলেও আমাকে কিছুই দেয় না। আমি সরকারের কাছে অনুরোধ করছি, আমাকে থাকার একটা ব্যবস্থা করে দিলে উপকার হতো।’
স্থানীয় বাসিন্দা আরিফ উদ্দিন জুয়েল জানান, গৌরদাস আগে গ্রামে গ্রামে ঘুরে কাঠ-খড়ি সংগ্রহ করে বিক্রি করতেন। এখন আর তেমন পথ চলতে পারেন না। তার দিন কাটে খুব কষ্টে। জীবনের শেষ প্রান্তে চলে আসা লোকটিকে সাহায্য করার জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
আরও পড়ুন: গৃহহীন ৬৬ হাজার পরিবারকে ঘর দিলেন প্রধানমন্ত্রী
আরও পড়ুন: পাবলিক টয়লেটে স্বামী-স্ত্রীর সংসার!
প্রতিবেশী কৃষক সহিদুল হক বলেন, ‘গৌরদাস ভিক্ষা করে চলেন। স্ত্রী-সন্তান না থাকায় একাই কোনোমতে দিনযাপন করেন। ভাগনে একটু থাকার মতো চালা পেতে দিয়েছে। সেই ঘরে কুকুর-বিড়াল এদিক দিয়ে ঢুকে ওদিক দিয়ে বের হয়! মানুষের বাড়িতে ঘুরে যা পান তা দিয়ে কোনো রকমে চলেন। এখন চোখে দেখেন এবং কানে শোনেন কম। এক প্রকার শ্রবণপ্রতিবন্ধী তিনি।’
স্থানীয় কাকিনা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান শহিদুল হক শহিদ জানান, তাদের এখানে আপাতত ঘরের বরাদ্দ নেই। পরবর্তী বরাদ্দের ক্ষেত্রে গৌরদাসের বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে একই ঘরে গরুসহ বৃদ্ধার বসবাস
কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ফেরদৌস আহমেদ বলেন, ‘তিনি ঘর পাওয়ার যোগ্য। পরবর্তী তালিকায় খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’