একটি ঝু্লে থাকা মামলার কারণে দুই দশক যাবত ভোট দিতে পারছেন না মতলব দক্ষিণ উপজেলার ছয় ইউনিয়নের মধ্যে সমৃদ্ধ ‘নারায়ণপুর’ইউনিয়নের অর্ধলাখ বাসিন্দা। এ ব্যাপারে সকলের মনে দীর্ঘদিনের চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। স্থবির হয়ে আছে এলাকার সব ধরনের উন্নয়ন।
প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা, ‘গ্রাম হবে শহর’ তা আর বাস্তবায়িতই হচ্ছে না অন্তত এই নারায়ণপুরে।
সংশ্লিষ্ট অফিস সুত্র জানায়, চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নকে সরকার, পৌরসভা ঘোষণা করেছিল ২০১০ সালে। এ ব্যাপারে সরকারি গ্যাজেটও প্রকাশ করা হয়েছিল। সেই সময়ের স্থানীয় সংসদ সদস্য সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহিউদ্দীন খান আলমগীর এ পৌরসভার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনও করেন। তিনমাস একজন পৌর প্রশাসকও দায়িত্ব পালন করেছেন। পরে এর সীমানা নির্ধারণ ( ল্যান্ড ডিমারকেশন) সংক্রান্ত জটিলতা নিয়ে উচ্চ আদালতে দায়ের করা হয় একটি মামলা। এর সমাধান হয়নি দীঘর্কাল যাবত। মামলাটি এখনও চলমান। মামলার এ জটিলতায় ইতোমধ্যে প্রায় ১২ বছর চলে গেলো। এর আগে এ ইউনিয়নে সাত বছরে কোন নির্বাচনও হয়নি। কেবল জাতীয়/সংসদীয় নির্বাচন হয়েছে কয়েকবার। মামলার কারণে গত দুই দশক এ ইউনিয়নের/এলাকার ৫০ হাজার লোক ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে নি। এর মধ্যে অন্যান্য ইউনিয়নে মহা আনন্দমুখর পরিবেশে ৩ বার ইউনিয়ন পরিষদ ভোট হয়েছে । দু বার জাতীয় নির্বাচন হয়েছে।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে দেয়াল ধসে নিহত ১, আহত ৩
সবর্শেষ এ ইউনিয়নে ভোট হয়েছিল ২০০৩ সালে-জানান, উপজেলা নির্বাচন অফিসার আবু জাহের ভুইয়া।
ফলে দুই দশক ধরে ভোটবঞ্চিত ওই এলাকার ৫০ হাজার নারী- পুরুষ। স্থবির হয়ে আছে সকল উন্নয়ন কাজ ।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ৯ দশমিক ২ বর্গ কিলোমিটারের এ ইউনিয়নে ৫০ হাজার বাসিন্দা রয়েছেন। আছে ৯টি ওয়ার্ড। ৩০ টির মতো মহল্লা। নারায়ণপুর বাজার মতলব দক্ষিণ উপজেলার একটি বিখ্যাত ও জমজমাট বাজার- যা দিনরাত ব্যস্ত থাকে। এখানে আছে ডিগ্রি কলেজ, হাই স্কুল ও অনেক প্রতিষ্ঠান।
উপজেলা নির্বাচন অফিসার আবু জাহের ভুইয়া ইউএনবি কে জানান, ২০০৩ সালে সবশেষ ভোট হয়েছিল। ২০১০ সালে নারায়ণপুর ইউনিয়নকে পৌরসভা ঘোষণা করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। একই বছরের ১৫ জুলাই স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় নারায়ণপুর পৌরসভা গেজেট প্রকাশ করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রশাসক নিয়োগ দেয়। অথচ পৌরসভার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করেন নারায়ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহিরুল মোস্তফা তালুকদার। এরপর থেকেই ঝুলে আছে এ ইউনিয়ন এলাকার নির্বাচন। যদিও সাধারণ মানুষ চায় সব সমস্যার সমাধান করে দ্রুত নির্বাচন দেয়া হোক। আমরা ভোট নিতে প্রস্তুত ।
তিনি জানান, এ ইউনিয়নে ভোটার সংখ্যা ৩২০১৭। এর মধ্যে নারী ভোটার ১৫১৯৬ । এটা পুরনো ভোটার তালিকা। মামলা নিষ্পত্তি হলে ভোটার সংখ্যা অনেক বাড়বে।
কারণ গত ২০ বছরে অনেক ভোটার বেড়েছে। জেলা নির্বাচন অফিসার তোফায়েল হোসেন জানান, মামলা উঠে গেলে আপডেট ভোটার তালিকা হবে। ভোটার বাড়বে।