দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিশ্ববাজারে যাচ্ছে কুমিল্লার সবজি। দেশের বৃহৎ সবজি আড়ৎ কুমিল্লার নিমসার বাজার থেকে প্রতিদিনই রপ্তানি হচ্ছে এ সবজি। প্রান্তিক কৃষকদের নিয়ে গঠিত ২০টি সমিতির মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয় বিদেশে রপ্তানিযোগ্য এ সবজি। এ কাজে স্থানীয় কৃষকদের সহযোগিতা করছে কৃষি সম্প্রসারণ অফিস।
কুমিল্লার কচুর লতি, লাউ, কুমড়া, শসা, বরবটি, করল্লা, ধুন্দুল, পুঁই শাক, ডাটা, লালশাক, বেগুনসহ বিভিন্ন সবজি যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের বাজারে। নিরাপদ ও বিষমুক্ত এসব সবজি রপ্তানিতে চাহিদা বাড়ছে দিন দিন। এখন প্রতি মাসে গড়ে সাত টন সবজি রপ্তানি হলেও শীতকালীন সময়ে মাসে গড়ে রপ্তানি হয় ১০ টনেরও বেশি। কুমিল্লার নিমসার কাঁচা বাজারে অবস্থিত কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ কৃষিপণ্য সংগ্রহ ও বাজারজাতকরণ কেন্দ্র থেকে এসব তথ্য জানা যায়।
কৃষিপণ্য সংগ্রহ ও বাজারজাতকরণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা সজিব মোল্লা জানান, সেপ্টেম্বর মাসে কুমিল্লার নিমসার বাজার থেকে কচুর লতি লন্ডন ও ইতালিতে রপ্তানি হয়েছে চার হাজার ৬২০ কেজি। ইতালিতে লাউ রপ্তানি হয়েছে এক হাজার ১৫ কেজি। ২২০ কেজি শসা রপ্তানি হয়েছে যুক্তরাজ্যে। ইতালিতে মিষ্টি কুমড়া রপ্তানি হয়েছে ২২০ কেজি। ৮৪ জন প্রান্তিক কৃষক থেকে এ সবজি কেনা হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রান্তিক কৃষকদের নিয়ে ২০টি সমিতি গঠন করা হয়েছে। এ সমিতিতে রয়েছেন ৪০০ প্রান্তিক কৃষক। তারাই এ সবজি উৎপাদন ও সরবাহ করে। ফলে তারা ন্যায্যমূল্যে সবজি বিক্রি করতে পারছে।
পড়ুন: অবশেষে আলোর মুখ দেখছে চট্টগ্রাম ওয়াসার পয়ঃনিষ্কাশন প্রকল্প
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কুমিল্লা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ জেলায় ২১ হাজার ৯০ হাজার হেক্টর জমিতে সবজির আবাদ হচ্ছে। বছরে দুই মৌসুমে মোট ৪ লাখ ৭২ হাজার ৩৭৪ মেট্রিক টন সবজি উৎপাদিত হয়। জেলার মানুষের চাহিদা বছরে দেড় লাখ মেট্রিক টন। বাকি সবজি ঢাকা, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় যায়। পাশাপাশি এখান থেকে বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে।
সম্প্রতি কুমিল্লার বরুড়া, বুড়িচংয়ের নিমসার ও চান্দিনার বরকট ইউনিয়নের পূর্ব রামচন্দ্রপুর গ্রামের কৃষকের বাজার কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে রপ্তানি করার জন্য আনা সবজি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে রপ্তানির উপযোগী করছেন কৃষকরা।
সবজি নিয়ে আসা কোরপাইয়ে এলাকার কৃষক শহিদুল, বরকইট ইউনিয়নের পিহর গ্রামের কৃষক সাইফুলসহ অনেকে জানান, আগে সবজি হাটে নিয়ে বিপাকে পড়তে হতো। বাজারে সবজির সরবরাহ বেশি হলে দাম কমে যেত। তখন অনেক সময় লোকসানে সবজি বিক্রি করতে হতো। এখন কৃষকের বাজার হওয়ায় সবজি বিক্রির আর কোনো সমস্যা হয় না। আর এখানে দিতে হয় না কোন খাজনা। আমরাও ন্যায্য মূল্য পাচ্ছি।
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তন: মোংলায় ৮৫ শতাংশ মানুষের নিরাপদ পানির ব্যবস্থা নেই