তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর হত্যা ও যৌন সহিংসতাসহ ভয়াবহ শক্তিপ্রয়োগের পর এখন দুই বছর পেরিয়ে গেছে, যা প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা মানুষকে দেশ থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে।’ এ ঘটনার জবাবদিহি বাধ্যতামূলক ও জরুরি বলে মন্তব্য করেন তিনি।
জেনেভায় মানবাধিকার কাউন্সিলের ৪২তম অধিবেশনের উদ্বোধনী বক্তব্যে বাশেলেত বলেন, এখন রাখাইন রাজ্য তথাকথিত আরাকান আর্মি ও তাতমাদাও’র (সেনাবাহিনী) মধ্যে আরেকটি সংঘর্ষ এবং আরেক দফা মানবাধিকার লঙ্ঘন ও বাস্তুচ্যুত হওয়ার ঘটনার সম্মুখীন।
তার মতে, এ ঘটনা জাতিগত রাখাইন ও রোহিঙ্গা উভয় সম্প্রদায়কে প্রভাবিত করবে এবং এটি এমনকি উদ্বাস্তু ও অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত লোকজনের ঘরে ফেরা কঠিন করে দেবে।
বাশেলেত জানান, সম্প্রতি শান রাজ্যে সংঘাতের তীব্রতা বৃদ্ধি এবং কাচিন রাজ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলা সংঘর্ষের কারণেও বাস্তুচ্যুতি ও মানুষের ভোগান্তি এবং শান্তি প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
মানবাধিকার কাউন্সিলের চলতি অধিবেশনে মিয়ানমার বিষয়ে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের চূড়ান্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি হবে। এতে দেশটি জুড়ে সংঘটিত শক্তিপ্রয়োগের ঘটনার গুরুত্ব ও মাত্রা সম্পর্কে বিশ্বকে পরিষ্কার ধারণা দেয়ার প্রশংসা করেন বাশেলেত।
কাশ্মীর ও এনআরসি
কাশ্মীর বিষয়ে বাশেলেত বলেন, নিয়ন্ত্রণ রেখার উভয় পাশের মানবাধিকার পরিস্থিতি বিষয়ে প্রতিবেদন পাওয়া তার কার্যালয়ের অব্যাহত আছে।
‘ইন্টারনেট যোগাযোগ ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশে বিধিনিষেধ এবং স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের আটকসহ কাশ্মীরিদের মানবাধিকারের ওপর ভারত সরকারের সাম্প্রতিক পদক্ষেপের প্রভাব নিয়ে আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন,’ বলেন তিনি।
মানবাধিকারের প্রতি যাতে সম্মান দেখানো এবং তা রক্ষা করা হয় সে জন্য বাশেলেত ভারত ও পাকিস্তান সরকারের প্রতি আহ্বান অব্যাহত রাখেন।
তিনি বিশেষ করে ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানান যাতে মানুষের মৌলিক সেবা পাওয়ার জন্য চলমান লকডাউন বা কারফিউ শিথিল করা হয় এবং যারা আটক আছেন তাদের সব প্রাপ্য অধিকারের প্রতি সম্মান দেখানো হয়।
কাশ্মীরের মানুষের ভবিষ্যতের ওপর প্রভাব ফেলা সিদ্ধান্ত-গ্রহণ প্রক্রিয়ায় তাদের সাথে পরামর্শ ও এতে তাদের যুক্ত করা গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেন বাশেলেত।
তিনি বলেন, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্য আসামে জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় ৩১ আগস্ট প্রকাশিত চূড়ান্ত তালিকা থেকে ১৯ লাখ মানুষের বাদ পড়া বিরাট অনিশ্চয়তা এবং উদ্বেগ তৈরি করেছে।
এ ক্ষেত্রে আপিলে সঠিক প্রক্রিয়া অনুসরণ, দেশ থেকে বিতাড়ন বা আটক রোধ ও মানুষ যাতে রাষ্ট্রহীন হয়ে না পড়ে তা নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আবেদন জানান বাশেলেত।