সংসদীয় বাজেট অধিবেশন শেষ হওয়ার পরে বৃহস্পতিবার ভারতের কংগ্রেস দলের সদস্যসহ ১০০ জনেরও বেশি বিরোধী আইনপ্রণেতা মোদি সরকারের বিরুদ্ধে একটি বিক্ষোভ মিছিল করেছে।
এসময় বিক্ষোভকারীরা বিশাল জাতীয় পতাকা বহন করে এবং স্লোগান দিয়ে বলতে থাকে, ভারতের গণতন্ত্র হুমকির মধ্যে রয়েছে এবং মোদির প্রশাসন বিরোধী নেতাদের ভয় দেখানোর জন্য কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থাগুলোর ‘অপব্যবহার’ করছে।
সংসদ ভবন থেকে কিছুদূর যাওয়ার পর পুলিশ তাদের বাধা দেয় এবং ছত্রভঙ্গ হতে বাধ্য করে।
এক ডজনেরও বেশি বিরোধী দলের নেতারা সংবাদ বিক্ষোভ শেষে সমাবেশ করেন।
কংগ্রেস দলের প্রধান মল্লিকার্জুন খার্গ তার দলের নেতা রাহুল গান্ধীকে একটি মানহানির মামলায় আদালত কর্তৃক দোষী সাব্যস্ত হওয়ার ২৪ ঘন্টারও কম সময়ের মধ্যে সংসদ সদস্য হিসেবে অযোগ্য ঘোষণার সমালোচনা করেছেন।
রাহুল গান্ধী ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে মোদীর বিরুদ্ধে বিরোধী শিবিরের নেতৃত্ব দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
গত সোমবার আপিল আদালতে রাহুল তার বিরুদ্ধে দেওয়া রায়কে চ্যালেঞ্জ করেন।
প্রধানমন্ত্রীর উপাধি নিয়ে ‘বিদ্রুপ’ করার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে দেওয়া কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে আপিলের পর আদালত রাহুলের কারাদণ্ড স্থগিত করেছেন।
আরও পড়ুন: ভারতে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধী দলের আইনপ্রণেতাদের বিক্ষোভ মিছিল
খার্গে বলেছেন, ‘সংসদীয় বাজেট অধিবেশনটি একটি বিপর্যয় ছিল, যথাযথ বিতর্ক ছাড়াই সরকার ১২ মিনিটের মধ্যে ২০২৩-২৪ এর বাজেট পাশ করেছে।’
এদিকে, আইনমন্ত্রী কিরণ রিজিজু সংসদের কার্যক্রম ব্যাহত করার জন্য বিরোধীদের দায়ী করেছেন।
অন্যদিকে মোদি বলেন, ‘জনগণের মধ্যে জনপ্রিয়তার থাকায় আগামী বছরের জাতীয় নির্বাচনে টানা তৃতীয়বারের মতো পাঁচ বছরের জন্য বিজয়ী হবে তার দল।’
তিনি তার হিন্দু জাতীয়তাবাদী ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) কর্মীদের পার্টির প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপন করার আহ্বান জানান।
মোদি আরও বলেন, নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি আনার জন্য ভারতের জনগণ বিজেপিকে সমর্থন করেছিল, কেননা বেশিরভাগ বিরোধী দল রাজনৈতিক পরিবার দ্বারা পরিচালিত।
রাহুল গত মাসে বলেছিলেন যে তিনি আদানি গ্রুপের প্রধান গৌতম আদানির সঙ্গে মোদির সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বলেই তাকে টার্গেট করা হয়েছে।
রাহুল আরও বলেন, পার্লামেন্ট থেকে তাকে বহিষ্কারের উদ্দেশ্য ছিল গৌতম আদানির নেতৃত্বে আদানি গ্রুপের মালিকানাধীন শেল কোম্পানিগুলোতে তিন বিলিয়ন ডলারের হিসাববিহীন বিনিয়োগের অভিযোগের বিষয়ে তাকে সংসদে কথা বলা থেকে বিরত রাখা।
ভারতের শীর্ষ আদালত সম্প্রতি আদানি গ্রুপের সঙ্গে সম্পর্কিত তদন্ত করার জন্য একটি বিশেষজ্ঞ কমিটিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মার্কিন শর্ট-বিক্রেতা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের একটি প্রতিবেদনে প্রকাশিত আদানি কোম্পানিগুলোর বাজারের কারসাজি এবং অন্যান্য প্রতারণামূলক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগ সামনে আসার নপর থেকেই এ ব্যাপারে তদন্তের বিষয়টি সামনে আসে।
হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট জারি করার পর থেকে গ্রুপের নামধারী আদানি এন্টারপ্রাইজ এবং অন্যান্য অনুমোদিত কোম্পানির শেয়ারগুলো কয়েক বিলিয়ন ডলারের বাজার মূল্য হারিয়েছে।