রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ অন্যান্য সংকটের সঙ্গে লক্ষাধিক শিশুর অপুষ্টি ঝুঁকি বাড়িয়েছে। কারণ বিশ্বব্যাপী খাদ্য মূল্যের ওপর ইতোমধ্যে এ যুদ্ধের ব্যাপক প্রভাব পড়েছে।
বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ এ তথ্য জানিয়েছে।
জাতিসংঘের শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) জানিয়েছে, রাশিয়া তার প্রতিবেশী দেশ ইউক্রেনে আক্রমণ করার ছয় সপ্তাহ পার হয়েছে। এসময়ে মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকায় অনেক পণ্যের আমদানি ব্যাহত হয়েছে। এ অঞ্চলসমূহের ৯০ শতাংশেরও বেশি খাদ্য বিদেশ থেকে আসে।
ইউনিসেফ আরও জানিয়েছে, গম, রান্নার তেল এবং জ্বালানিসহ প্রয়োজনীয় জিনিসের দামও বেড়েছে। যদি এই পরিস্থিতি চলতে থাকে তবে ‘এটি শিশুদের ওপর; বিশেষ করে মিশর, লেবানন, লিবিয়া, সুদান, সিরিয়া এবং ইয়েমেনে মারাত্মকভাবে প্রভাব ফেলবে।’
আরও পড়ুন: রেলস্টেশনে রাশিয়ার রকেট হামলায় ৩০ জনের বেশি নিহত: ইউক্রেন
ইউনিসেফের মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার আঞ্চলিক পরিচালক অ্যাডেল খোদর বলেন, খাদ্যের দামের অভাবনীয় বৃদ্ধি ঘটেছে। চলমান সংঘাত, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, মহামারি ও ইউক্রেনের যুদ্ধের কারণে অনেক পরিবার খাবার কিনতে হিমশিম খাচ্ছে।
অ্যাডেল বলেছেন, এধরনের একাধিক সমস্যার কারণে ‘অপুষ্টিতে আক্রান্ত শিশুদের সংখ্যা মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে’।
ইউনিসেফের মতে, মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার প্রতি ১০টির মধ্যে চারটিরও কম শিশু সঠিকভাবে বেড়ে ওঠার জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য গ্রহণ করে।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে রাশিয়ার সদস্যপদ স্থগিত
এই অঞ্চলটি ইতোমধ্যেই উচ্চ হারে অপুষ্টি ও মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টের ঘাটতির আবাসস্থল। যার অর্থ হল প্রায় প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজন শিশু খর্বাকার এবং প্রায় একই সংখ্যক শিশু ওজন স্বল্পতায় ভুগছে।
মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার দেশগুলোর পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে উঠছে। কেননা ইউক্রেন যুদ্ধের সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে এ অঞ্চলে।
ইয়েমেনে ৪৫ শতাংশ শিশু খর্বাকার এবং ৮৬ শতাংশের বেশি শিশু রক্তশূন্যতায় ভুগছে। যার সবচেয়ে সাধারণ কারণগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে পুষ্টি ঘাটতি।
ইউনিসেফ আরও সতর্ক করেছে যে, সুদানে শিশু মৃত্যুহার ১৩ দশমিক ৬ শতাংশ। ৩৬ দশমিক ৪ শতাংশ শিশু খর্বাকার এবং প্রায় অর্ধেক সংখ্যক শিশু রক্তশূন্যতায় ভুগছে।
লেবাননে ৯৪ শতাংশ কমবয়সী শিশু তাদের প্রয়োজনীয় খাবার পায় না। যেখানে ৪০ শতাংশের বেশি নারী এবং পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুরা রক্তশূন্যতায় ভুগছে।
সিরিয়ায় ২০২১ সালে গড়ে সব ধরণের খাবারের দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। দেশটির প্রতি চারজন শিশুর মধ্যে মাত্র একজন পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যকর খাবার পায়।