নওগাঁয় পুলিশের সাথে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষে অন্তত অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে শহরের কেডির মোড় এলাকায় বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীর বরাতে পুলিশ জানায়, হেফাজত কর্মী নিহতের ঘটনার প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে দুপুর ১২টার দিকে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করার চেষ্টা করে নেতা-কর্মীরা। এ সময় উপস্থিত কিছু পুলিশ সদস্য তাদেরকে বাধা দেয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ ও বিএনপি নেতা-কর্মীদের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। একপর্যায়ে লাঠিচার্জ শুরু করলে বিএনপির নেতা-কর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এ ঘটনার দুই-তিন মিনিট পরে বিএনপির নেতা-কর্মীরা আবারও জড়ো হয়ে দলীয় কার্যালয়ের পূর্ব দিক থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ারশেল, রাবার বুলেট ও ফাঁকা গুলি ছুড়ে। সংঘর্ষ চলে প্রায় ২০ মিনিট ধরে। এতে ব্রিজের মোড়-কলেজ মোড় সড়ক ও কেডির মোড়-ব্রিজের সড়ক দিয়ে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে নওগাঁ সদর থানা ও পুলিশ লাইনস থেকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হলে বিএনপির নেতা-কর্মীরা রাস্তা ছেড়ে দেয়।
আরও পড়ুন: সিলেটে আওয়ামী লীগ-বিএনপি সংঘর্ষ
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাফিজুর রহমান বলেন, ‘কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আমরা দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করার চেষ্টা করি। কিন্তু পুলিশ কোনো কারণ ছাড়াই নেতা-কর্মীদের ওপর লাঠিচার্জ শুরু করে। নেতা-কর্মীরা কেডির মোড় এলাকা থেকে দলীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিলে সেখানে পুলিশ টিয়ারশেল, রাবার বুলেট ও গুলি ছুড়ে। এতে আমিসহ দলের অন্তত ৩০-৪০ জন নেতা-কর্মী আহত হই। পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত জেলা যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক কোহিনুর ইসলাম মিলি ও জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক আজিজুল ইসলামকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। অন্যদের নওগাঁ সদর হাসপাতলসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: সাভারে আ’লীগ-বিএনপি সংঘর্ষ, বিএনপির ৪ নেতা-কর্মী আটক
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রকিবুল আক্তার বলেন, অনুমতি ছাড়াই বিএনপির নেতা-কর্মীরা মিছিল বের করার চেষ্টা করে। ব্যস্ততম সড়ক দিয়ে মিছিল করার চেষ্টা করলে উপস্থিত সদস্যরা তাদেরকে বাধা দেয়ার চেষ্টা করে। এ সময় বিএনপির কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশও টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে। বিএনপির কর্মীদের হামলায় ছয়-সাতজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ধলু জানান, পুলিশের সাথে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের পর দুপুর ২টার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রকিবুল আক্তারের নেতৃত্বে নওগাঁ শহরের তাজের মোড় এলাকার অন্বেষা নিশান ক্লাবে অভিযান চালিয়ে মুকুল হোসেন (৪৫), রেন্টু হোসেন (৪৪), সহিদুল ইসলাম (৪৬), আলাউদ্দিন বাবু (৫০), আনোয়ার হোসেন (৫০) ও এনামুল হককে (৩২) আটক করে নিয়ে গেছে পুলিশ।