সুস্পষ্টভাবে ভারতকে খোঁচা দিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেন, ৭ জানুয়ারির ‘ডামি’ নির্বাচন করতে একটি দেশ বাংলাদেশে সরাসরি হস্তক্ষেপ করছে।
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী গতকাল (বৃহস্পতিবার) বলেছেন, নির্বাচন নিয়ে দেশে- বিদেশে ষড়যন্ত্র চলছে। আপনারাই নির্বাচনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। একটি প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশে একটি ডামি নির্বাচন করতে সরাসরি হস্তক্ষেপ করছে।’
তিনি অবশ্য ভারতের নাম উল্লেখ করেননি।
শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় প্রচারপত্র বিতরণকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি দেশবাসীকে সাজানো নির্বাচন বর্জনের আহ্বান জানান।
সরকার শুধু ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে বিসর্জন দিয়ে বাংলাদেশকে একটি দালাল রাষ্ট্রে পরিণত করার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করেন রিজভী।
তিনি বলেন, ‘মানুষ তাদের নীলনকশা সফল হতে দেবে না।’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হবে না। ‘এটি আসন ভাগাভাগি ও বণ্টনের নির্বাচন। এটা একটা প্রহসনমূলক নির্বাচন।’
জনগণই দেশের মালিক উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার জনমত উপেক্ষা করে ডামি নির্বাচন করে বিদেশিদের ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করছে। যতই ষড়যন্ত্র করুক না কেন সরকার সফল হবে না।
আরও পড়ুন: ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে নিতে সরকারের 'মরিয়া' চেষ্টায় সাড়া মিলছে না: রিজভী
তিনি বলেন, ‘আমরা ভোটারদের এই ডামি নির্বাচন বর্জনের আহ্বান জানাচ্ছি... ভোটের দিন ঘরে থাকুন, ভোটকেন্দ্রে যাবেন না। ভোটকেন্দ্রে না গিয়ে এই অবৈধ নির্বাচনকে না বলুন।’
দলের দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে রিজভী বিএনপির কয়েকজন নেতা-কর্মীকে নিয়ে সকালে রাজধানীর ধানমন্ডি-১৫-এর কাঁচা বাজারে লিফলেট বিতরণ করেন।
৭ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জন ও আওয়ামী লীগ সরকারকে সহযোগিতা না করার আহ্বানের পক্ষে জনসমর্থন জোগাড় করতে বিএনপি ও সমমনা বিরোধী দলগুলো লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ কর্মসূচি পালন করছে।
বৃহস্পতিবার দলটি গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচির মেয়াদ শনিবার পর্যন্ত আরও দুই দিন বাড়িয়েছে।
বর্তমান সরকারকে পদত্যাগ করতে এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ প্রশাসনের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে বাধ্য করতে গত বছরের ১০ ডিসেম্বর থেকে প্রায় তিন ডজন বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বিএনপি যুগপৎ আন্দোলন চালিয়ে আসছে।
গত ২৮ অক্টোবর দলের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষের পর বিএনপির আন্দোলন গতি হারিয়ে ফেলে, কারণ এরপর দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ অনেক সিনিয়র নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং অনেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তারের ভয়ে আত্মগোপনে চলে যায়।
তবে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো ২৯ অক্টোবর থেকে ১২ দফায় ২৩ দিন দেশব্যাপী অবরোধ এবং চার দফায় পাঁচ দিন হরতাল দেয়।
অবশেষে ২০ ডিসেম্বর বিরোধী দল অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেয়।
আরও পড়ুন: ইসির আন্দোলন বন্ধ করতে চাওয়া নজিরবিহীন ও গণবিরোধী: রিজভী
ক্ষমতাসীন দলের এমপি-মন্ত্রীদের হাতে আলাদিনের বাতি আছে: রিজভী