বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, সরকার আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে ‘মিথ্যা’ মামলায় সারাদেশে তাদের সম্মুখ সারির নেতাদের সাজা দিতে একটি সেল গঠন করেছে।
শুক্রবার বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
এসময় ফখরুল বলেন, সরকার ২০১৪ সালের মতো একতরফা নির্বাচন করতে পুলিশ, বিচার বিভাগ ও রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা করছে।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘২০১৩ সালে মুগদা থানায় দায়ের করা একটি মিথ্যা ও কাল্পনিক মামলায় আমাদের সাত নেতাকর্মীকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এটা সারা দেশেই হচ্ছে।
তিনি বলেন, সরকার বিভিন্ন জেলায় বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের তালিকা তৈরি করেছে বলে শুনেছি। সামনের সারির নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য একটি সেল গঠন করা হয়েছে।
ফখরুল বলেন, মুগদা থানার একটি ‘বানোয়াট’ মামলায় বিএনপির সাত নেতার সাজা প্রমাণ করেছে যে বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে না।
আরও পড়ুন: নিজেদের ‘অপকর্ম’ থেকে বাঁচতে সরকার বিদেশিদের খুশি করার চেষ্টা করছে: বিএনপি
তিনি অভিযোগ করেন, আগামী সাধারণ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার, হয়রানি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের শেষ করার জন্য সরকার আবারও পুরনো ধারা অনুসরণ শুরু করেছে।
ফখরুল বলেন, ‘এটি মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ এবং গণতন্ত্রের বিরুদ্ধেও অপরাধ। ’
বিএনপি নেতা বলেন, সরকার বাম দলগুলোর মতো অন্যান্য বিরোধী দলকেও দমন করার চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, ‘তারা (সরকার) ২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও নির্বাচনের মাঠ ফাঁকা করার চেষ্টা করছে।’
এসময় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে লিফলেট বিতরণকালে রাজধানীর মতিঝিল এলাকা থেকে তাদের দলের নেতা ইশরাক হোসেনকে ‘মিথ্যা’ মামলায় গ্রেপ্তারের নিন্দা জানান ফখরুল।
তিনি বলেন, ইশরাককে গ্রেপ্তার করে ঢাকার আদালতে নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন, টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও গুলি চালায়।
ফখরুল বলেন, ক্ষমতাসীন দলের নেতারা গণতন্ত্র ও সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বললেও সরকার বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের নির্মূল করার চেষ্টা করছে।
আরও পড়ুন: জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে: বিএনপি
তিনি বলেন, নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে আলোচনা করছেন এবং বিভিন্ন বক্তব্য দিচ্ছেন।
তিনি বলেন, এগুলো সবই ক্ষমতাসীন দলের আরেকটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের এবং অতীতের মতো এর ফলাফল হেরফের করার নাটকের অংশ।
ফখরুল বলেন, আগামী নির্বাচনে কারচুপির জন্য ক্ষমতাসীন দল নতুন কৌশল নিয়ে আসবে।
তিনি বলেন, ‘আগামী নির্বাচন গত নির্বাচনের মতো ভোটের আগের রাতে নাও হতে পারে। এবার ভোটের সাত দিন আগে অনুষ্ঠিত হতে পারে।’
তিনি বিএনপি ও এর নেতাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক বক্তব্য দেয়ার জন্য পুলিশের মহাপরিদর্শক ও ডিএমপি কমিশনারের সমালোচনা করে বলেন, ‘প্রজাতন্ত্রের দাসেরা যেভাবে কথা বলে, তা আমাদের ধারণা দেয় যে আমরা একটি সভ্য দেশে বাস করছি না।’
আরও পড়ুন: রমজানেও মানুষ অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে: মির্জা ফখরুল