কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ আব্দুর রহিম এ আদেশ দেন।
রায় ঘোষণার সময় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত নজরুল ইসলাম (২৫) আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ২০১৭ সালের ১৩ জানুয়ারি স্ত্রী রহিমা খাতুন ও ছেলে আমিরুলকে বেড়াতে নিয়ে যাবার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন নজরুল। এরপর থেকেই সন্তানসহ নিখোঁজ হন রহিমা। ২১ জানুয়ারি বিকালে আঙ্গিয়াদী বিলভরা বিল এলাকা থেকে মা ও ছেলের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় রহিমার ভাই বাদী হয়ে নজরুলসহ চারজনকে আসামি করে পাকুন্দিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ২০১৮ সালের ২৪ জানুয়ারি আদালতে নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
সাক্ষ্য জেরা শেষে আদালত নজরুল ইসলামকে দণ্ডবিধি ৩০২ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড ও দুই লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেয়।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে বউ-ছেলেকে হত্যা মামলায় স্বামীসহ ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড
ফেনীতে বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরী হত্যা মামলায় একজনের মৃত্যুদণ্ড
মানিকগঞ্জে ইউপি সদস্য হত্যা, নারীসহ ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড
কুমিল্লায় সেনা সদস্য হত্যা মামলায় ৪ জনের ফাঁসির আদেশ
মামলাটিতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন এপিপি যজ্ঞেম্বর রায় ও আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট অশোক সরকার।
কুমিল্লায় হত্যা মামলায় ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড
কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে সেনা সদস্য আবদুর রহমান হত্যা মামলায় সোমবার চারজনকে ফাঁসি এবং একজনকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত।
কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৪র্থ আদালতের বিচারক রোজিনা খান এ আদেশ দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর থানার চম্পকনগর বাদারিয়া গ্রামের মৃত রুহুল আমিনের ছেলে মো. সিরাজুল ইসলাম, একই থানার উথারিয়া গ্রামের রেজু মিয়ার ছেলে উজ্জল মিয়া, চট্টগ্রামের হাটহাজারী থানার মৌলভীপাড়া গ্রামের মৃত রফিক মিয়ার ছেলে জনি ও হবিগঞ্জের বানিয়াচং থানার মশাখালী গ্রামের আকাশী দাসের ছেলে প্রদীপ দাস।
১০ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আলী আক্কাছ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের বাসুদেব গ্রামের মৃত লাহু মিয়ার ছেলে।
রায় ঘোষণার সময় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা আদালতে উপস্থিত থাকলেও ১০ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি পলাতক রয়েছেন।
আরও পড়ুন: হত্যার দায়ে ফেনী ও পিরোজপুরে ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড
জানা গেছে, চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার মদনের গাঁও গ্রামের হাফেজ মাওলানা মফিজুল ইসলামের ছেলে আবদুর রহমান বগুড়া সেনানিবাসে সৈনিক পদে কর্মরত ছিলেন। ২০১৬ সালের ২১ অক্টোবর রাতে চট্টগ্রামের রাউজান সরকারি কলেজ কেন্দ্রে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়ে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী মেইল ট্রেনে রওনা হন। ট্রেনে একদল ডাকাত যাত্রীদের মালামাল লুটকালে আবদুর রহমান তাদের বাধা দিলে ডাকাতরা তাকে কুপিয়ে হত্যার পর নাঙ্গলকোট রেলওয়ে স্টেশনের দক্ষিণে গোত্রশাল দিঘীর পশ্চিম পাশে লাশ ফেলে দেয়। খবর পেয়ে লাকসাম রেলওয়ে থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় পরদিন রাতে নিহত আবদুর রহমানের বাবা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে লাকসাম রেলওয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন।
তদন্তকালে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২০১৭ সালের ১১ জুলাই পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। এ মামলায় ২৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে সোমবার এ রায় দেয় আদালত। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন এসআই মো. আতাউর রহমান।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট শেখ মাসুদ ইকবাল মজুমদার ও আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট নাঈমা সুলতানা মুন্নী।
হত্যার দায়ে ফেনী ও পিরোজপুরে ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড
ফেনী
ফেনীর ফুলগাজী উপজেলায় সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক মুলকত আহম্মদ কালা মিয়া হত্যা মামলায় তিন আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও অপর এক আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে জেলা ও দায়রা জজ ড. বেগম জেবুন্নেছা। একই সাথে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলার ১৬ আসামিকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন-হুমায়ুন হাছান রাকীব, আবদুর রহমান মানিক ও আবু তৈয়ব বাবলু। যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সুমন চন্দ্র রায়। পাশাপাশি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিনজন এবং যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত একজনকে ৪০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
খালাসপ্রাপ্ত ১৬ জন হলেন- মো. রাসেল, সোহাগ, আবু তৈয়ব বাবলু, মোশারফ হোসেন, রুবেল মিয়া, দিদার হোসেন রিপন, আলমগীর হোসেন বাবু, মাঈন উদ্দিন ঝিনুক, মো. জহির, নূর মোহাম্মদ জুয়েল জনি, সাফায়াত আহম্মদ পাটোয়ারী রাকিব, হাছান ইমাম, মো. সাফুল ইসলাম, মো. লোকমান হোসেন, সুমন চন্দ্র রায়, শরীফ প্রকাশ টিপু, তৌহিদ উল্যাহ, এনায়েত হোসেন রাজু।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সরকারি কৌঁসুলি হাফেজ আহম্মদ জানান, গত ২ ফেব্রুয়ারি একই আদালতে রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়।
মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, ২০১০ সালের ১৮ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টার দিকে পরশুরাম থেকে সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালিয়ে মুন্সিরহাটের উদ্দেশে বের হন মুলকত আহাম্মদ কালা মিয়া। রাত ১২টা পর্যন্ত বাড়ি না ফেরায় তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। একপর্যায়ে রাত ৩টার দিকে জগতপুর রোডের টুক্কু মিয়ার পুলের পশ্চিম পাশে পানি থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় তার বড় ভাই ফখরুল আহাম্মদ মজুমদার বাদী হয়ে ফুলগাজী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তৎকালীন ওসি সৈয়দুল মোস্তফা ২০১১ সালের ২৮ মে আদালতে ২০ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ করে ২০১২ সালের ২৫ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার কাজ শুরু করে।
পিরোজপুর
পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলায় হত্যা মামলার এক আসামিকে সোমবার ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃতুদণ্ডের আদেশ দিয়েছে জেলা ও দায়রা জজ মো. মহিদুজ্জামান। পাশাপাশি তাকে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হাসিবুল ইসলাম কাঞ্চন (৩৫) পিরোজপুর জেলার ইন্দুরকানী উপজেলার খোলপটুয়া গ্রামের আবু বক্কলের ছেলে ও নিহত রেজাউল করিম রিপন (৪০) জেলার ইন্দুরকানী উপজেলার চর বলেশ্বর গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে ও কে সি টেকনিক্যাল কলেজের অফিস সহকারী।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর রেজাউল করিম রিপন তার নিজ বাড়ির চর বলেশ্বর থেকে ভ্যানযোগে পত্তাশী বাজারে যাবার সময় পরিবারিক বিরোধের জের ধরে একই এলাকার হাসিবুল ইসলাম কাঞ্চন হামলা চালায়। এ সময় তিনি রিপনকে কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে জখম করলে ঘটনাস্থলেই তিনি নিহত হন। এ ঘটনায় নিহত রিপনের স্ত্রী নাসরিন আক্তার হাসি ওইদিনই ইন্দুরকানী থানায় মামলা দায়ের করেন।