ভাঙন কবলিতরা পাচ্ছেন না মাথা গোঁজার ঠাঁই। ভাঙনরোধে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় যেকোনো মুহূর্তে বিলীন হয়ে যেতে পারে হাটটি।
আরও পড়ুন: রড ও সিমেন্টের দাম বৃদ্ধি: কুড়িগ্রামসহ উত্তরাঞ্চলে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড স্থবির
বৃহস্পতিবার সরেজমিন কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার প্রত্যন্ত বেগমগঞ্জ ইউনিয়নে ভাঙনকবলিত স্থানে গিয়ে ইউএনবির এই প্রতিনিধি দেখেন, ব্রহ্মপুত্র নদ মোল্লারহাটের পূর্ব দিকের অংশে প্রায় এক কিলোমিটার জায়গাজুড়ে ভাঙছে। বর্তমানে মোল্লারহাটটি ভাঙনের মুখে।
ওই এলাকার উত্তর বালাডোবা গ্রামের ইব্রাহিমের স্ত্রী ছালেহা জানান, তার সংসার চলে স্বামীর খড়ি বিক্রির টাকায়। তিন ছেলে, দুই মেয়ের মধ্যে এক মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। বাড়িভিটা ভেঙে যাওয়ায় জায়গা না পেয়ে নদীর তীরে ছাপড়া তুলে ৬ মাস ধরে অবস্থান করছেন তারা। এখন পর্যন্ত কেউ এগিয়ে আসেনি।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে ধরলা ব্রিজের নিচ থেকে যুবকের লাশ উদ্ধার
এরকম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন ওই এলাকার সোনাভান, ছালেহা, ছামাদ ও জহুর আলী। ঘর-বাড়ি সরিয়েছেন। কিন্তু এখনো থাকার জায়গা পাননি। ফলে চরম দুশ্চিন্তায় কাটছে তাদের দিন।
বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের সদস্য মহু বাদশা জানান, গত পাঁচ বছরে মানচিত্র থেকে হারিয়ে গেছে ৬নং ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ডের মানুষ এখন ৪ ও ৭নং ওয়ার্ডে আশ্রয় নিয়েছে। চলতি বছর নদী ভাঙনে গৃহহীন হয়েছে দুটি ওয়ার্ডের প্রায় ৭ শতাধিক মানুষ। জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসেই ভেঙে গেছে ৬০টির মত বাড়ি। ভাঙনের মুখে রয়েছে বসতবাড়ি, গাছপালাসহ আবাদি জমি। গৃহহীন পরিবারগুলো কোথায় আশ্রয় নেবে এই দুশ্চিন্তায় কাটছে তাদের দিনক্ষণ। কেউ কেউ জায়গা না পেয়ে নদীর তীরে ছাপড়া তুলে মানবেতরভাবে দিন কাটাচ্ছে।
ওই ইউনিয়নের আরেক সদস্য জামাল মণ্ডল জানান, এই অঞ্চলের মানুষের একমাত্র ঐতিহ্যবাহী মোল্লারহাট রয়েছে ভাঙনের মুখে। চরাঞ্চলের মানুষের কেনাবেচার জন্য প্রয়োজনীয় এই হাটটি রক্ষায় মানববন্ধনসহ বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি চালাচালি করেও প্রতিকার মিলছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে ৫ শতাধিক জিও ব্যাগ দেয়া হলেও তা কাজে আসছে না। জিও ব্যাগ নয় স্থায়ী ভাঙনরোধে সিসি ব্লক ফেলার দাবি এলাকাবাসীর।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে সম্ভাবনা জাগাচ্ছে ব্রকলি চাষ
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম বলেন, শুকনো সময়েও মোল্লারহাটে নদী ভাঙন রয়েছে। এরই মধ্যে আমরা ভাঙন রোধে কিছু জিও ব্যাগ ডাম্পিংয়ের প্রস্তুতি নিয়েছি। স্থায়ীভাবে এটা রোধ করার জন্য বাজেট চেয়ে আবেদন করেছি। খুব তাড়াতাড়ি অনুমোদন পেলে আমরা স্থায়ীভাবে কাজ শুরু করতে পারবো এবং ভাঙনরোধ করা সম্ভব হবে।