সোনালী ব্যাংক খুলনা করপোরেট শাখার ১৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে স্টার সি ফুড ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. সালাউদ্দিন, ব্যাংকের গোডাউন কিপার আ. মান্নান হাওলাদারসহ তিনজনের নামে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) খুলনা।
দুদকের উপপরিচালক মো. শাওন মিয়ার করা এই মামলা সোমবার খুলনা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে নথিভুক্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন: বগুড়ায় পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
মামলার এজাহারে বলা হয়, স্টার সি ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড সোনালী ব্যাংক খুলনা করপোরেট শাখা থেকে ১৮ কোটি ৫০ লাখ টাকার ঋণ নেয়। এই ঋণের বিপরীতে গোডাউনে রক্ষিত রপ্তানিযোগ্য চিংড়ি মাছ জামানত ছিল। ব্যাংকের পক্ষ থেকে গোডাউন কিপার আ. মান্নান হাওলাদার ও সাপোর্টিং স্টাফ আ. রহিম বাবু গোডাউন রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে ছিলেন।
স্টার সি ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের এমডি মো. সালাউদ্দিন ব্যাংকের গোডাউন কিপারের যোগসাজশে ২০১৭ সালের ১৫ জুলাই থেকে ১০ আগস্ট রপ্তানিযোগ্য চিংড়ি মাছ স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে দেন। গভীর রাতে গোডাউন খুলে চিংড়ি মাছ পাচারকালে ব্যাংকের তৎকালীন ডিজিএম মো. আবু হোসেন শেখ (বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত) পুলিশের সহায়তায় গোপন মাছ বিক্রির প্রমাণ পান। তিনি নিজে বাদী হয়ে মামলা করেন। কিন্তু এই ঘটনায় ব্যাংকের সিবিএর নেতারা ক্ষিপ্ত হয়ে ডিজিএমকে লাঞ্ছিত করেন এবং পুলিশের কাছে মিথ্যা সাক্ষ্য দিলে পুলিশ পক্ষপাতমূলকভাবে এই মামলায় ফাইনাল রিপোর্ট দেয়।
দুদকের এজাহারে উল্লেখ রয়েছে , মো. আ. রহিম বাবু ব্যাংকের সিবিএ নেতা হওয়ায় তখনকার ডিজিএমকে এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা না নেয়ার হুমকি দেন। এমতাবস্থায় ডিজিএম সিবিএ নেতাদের চাপে কোনো ব্যবস্থা নিতে এবং তার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারেননি।
ব্যাংকের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের অভিযোগ, দুদক মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি মো. আ. রহিম বাবু শ্রমিক লীগনেতা ও সোনালি ব্যাংক সিবিএর সাবেক সভাপতি। দলীয় কারণে তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া যায়নি। অবসরে গেলেও নতুন নির্বাচন না হওয়ায় তিনিই এখনো সিবিএ নেতা। পরে দুর্নীতি দমন কমিশন ঘটনার তদন্ত শুরু করে এবং প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় এই মামলা দায়ের করে।
আরও পড়ুন: যশোরে দুদকের মামলায় রাজস্ব কর্মকর্তা কারাগারে
সোনালী ব্যাংক খুলনা করপোরেট শাখার বর্তমান ডিজিএম শেখ শহিদুল ইসলাম জানান, গোডাউন কিপার আ. মান্নান হাওলাদার সাময়িক বরখাস্ত আছেন। মামলার কপি পাওয়া গেলে অন্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি জানান, স্টার সি ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে অর্থঋণ আদালতে প্রায় ২০ কোটি টাকা ঋণ খেলাপির মামলা দায়ের করা হয়েছে।