দুর্যোগ সহনীয় দুই শতাংশ জমির ওপর লাল ও সবুজ রংয়ের নির্মাণাধীন প্রতিটি সেমি পাকা বাড়িতে বাথরুমসহ দুটি কক্ষ, একটি রান্নাঘর ও বারান্দা রয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের আশ্রয়ন প্রকল্প-২ এর আওতায় সরকারি খাস জমিতে এসব বাড়ি নির্মাণ করে দেয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ঝালকাঠিতে আশ্রায়ন প্রকল্প নির্মাণের ৭ মাসেও বরাদ্দ পাননি ভূমিহীনরা
সুপেয় পানির জন্য প্রতিটি বাড়িতে একটি করে টিউবওয়েল থাকছে। প্রতিটি বাড়ির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে এক লাখ ৭১ হাজার টাকা। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর এসব ঘর নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের পাঁচ উপজেলায় ভূমিহীন ও গৃহহীনদের প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে এক হাজার ৩১৯টি বাড়ি দেয়া হবে। জেলার সদর উপজেলায় ১৩০টি, শিবগঞ্জ উপজেলায় ৭৩৭টি, নাচোল উপজেলায় ২০০টি, ভোলাহাট ১৫৭টি ও গোমস্তাপুর উপজেলায় ৯৫টি।
আরও পড়ুন: নেত্রকোনার ৯৬০ গৃহহীন পরিবার ঘর পাচ্ছেন
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২৩ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বাড়িগুলো সুবিধাভোগীদের মধ্যে হস্তান্তর কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এ কে এম তাজকির উজ জামান জানান, মুজিববর্ষকে ঘিরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় গৃহহীন ও ভুমিহীনদের জন্য ঘর নির্মাণ কাজ একদম শেষ পর্যায়ে। দুই শতক জমির ওপর নির্মিত প্রতিটি বড়ি নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে এক লাখ ৭১ হাজার টাকা। উন্নত মানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করে ঘরগুলো মজবুত করে তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া সুপেয় পানি ও বিদুৎ সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: শার্শায় ৫০ ভূমি ও গৃহহীন পরিবারের জন্য তৈরি হচ্ছে পাকা ঘর
জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ জানান, প্রথম পর্যায়ে জেলায় এক হাজার ৩১৯টি বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে এসব বাড়ির সুবিধাভোগী নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। তাদেরকে জমির মালিকানা ও ঘর হস্তান্তরের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরীর কাজও শেষ পর্যায়ে। আশা করা যায় নির্ধারিত সময়ে ঘরগুলো হস্তান্তর করা হবে।
আগামী ২৩ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ ঘরগুলো উদ্বোধন করবেন, জানান তিনি।
অন্যদিকে, মাগুরায় মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে আশ্রায়ন-২ প্রকল্পের আওতায় প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে ১১৫টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার পাচ্ছে জমিসহ নতুন ঘর।
আরও পড়ুন: মুজিব বর্ষে ঘর পাচ্ছেন ফরিদপুরের দেড় হাজার গৃহহীন পরিবার
প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মমিনুল ইসলাম জানান, মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে অগ্রাধিকার আশ্রায়ন-২ প্রকল্পের আওতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে জমি নাই, ঘর নাই এ রকম জেলার ১১৫টি ভূমিহীন পরিবারের জন্য দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সেমিপাকা ঘর নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। প্রতিটি পরিবারের জন্য দুই শতক জমিসহ ঘরের দুইটি কক্ষ, সংযুক্ত রান্নাঘর, সামনে খোলা বারান্দা ও টয়লেট রয়েছে। যার বরাদ্দ ঘর প্রতি এক লাখ ৭১ হাজার টাকা।
মাগুরা সদর উপজেলায় ১৫টি, মহম্মদপুরে ৩০টি, শ্রীপুরে ২০টি এবং শালিখা উপজেলায় ৫০টি ভূমিহীন পাবেন এই নতুন ঘর।
এই ঘরের জন্য নির্বাচিত অসহায় হতদরিদ্র পরিবারগুলো খুশি। তাদের চোখে-মুখে আনন্দের ছাপ। কবে যাবেন তাদের এই স্বপ্নের ঠিকানায়; এই ভেবে ভেবেই কাটছে তাদের দিন-রাত।
আরও পড়ুন: নওগাঁয় ১৭৮টি গৃহহীন পরিবার পেলো নতুন ঘর
সুবিধাভোগী মোরাইল পশ্চিমখন্ড গ্রামের আবুল কালাম, বঙ্গেশ্বররের শাহিনা বেগম, বাশোর হাসিনা বেগম এবং দাতিয়াদাহর আলমগীরসহ কয়েকজনে বলেন, পরের জায়গায় থাকতে আর ভালো লাগে না, তাই নতুন এই জমি ও ঘর পেয়ে তারা খুশি।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানান, ঘর নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। তারা নিয়মিত তদারকি করছেন। এছাড়াও নির্দেশিকা অনুযায়ী সুবিধাভোগীদের যাচাই-বাচাই শেষ করে তালিকা করা হয়েছে। সামান্য রঙের কাজ বাকি আছে। আগামী ২৩ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সারাদেশে একযোগে এই ঘরের উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধন শেষে সুবিধাভোগীদের হাতে জমির দলিলাদিসহ ঘর তুলে দেয়া হবে।