চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ৫০০ টাকা করার দাবি উঠেছে। চা শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা আবু জাফর এই দাবি করেন। তিনি বলেন, দৈনিক মজুরি ১১৭ টাকা নির্ধারণ করে দেয়া মজুরি বোর্ডের খসড়া সুপারিশের বিষয় অযৌক্তিক। দৈনিক মজুরি ৫০০ টাকা করা হোক।
সোমবার দুপুর ১টায় সিলেট সদর উপজেলার খাদিম চা বাগানে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশন সিলেট জেলার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এক সভায় তিনি এই দাবি করেন।
আরও পড়ুনঃ পঞ্চগড়ে চা বাগান ও জঙ্গল কেটে খোঁজা হচ্ছে বাঘ
আবু জাফর বলেন, ১৮৫৪ সালে সিলেটের মালিনীছড়া চা-বাগান প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে এই উপমহাদেশে চা শিল্পের যাত্রা শুরু। সেই হিসেবে এই অঞ্চলে চা শিল্পের বয়স ১৭২ বছর। অথচ চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি এখনো ১৭২ টাকা হয়নি। ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত চা শ্রমিকেরা ক্ষুব্ধ হয়ে ন্যায্য মজুরি নির্ধারণে মজুরি বোর্ড গঠনের দাবি তুলেছিলেন। শ্রমিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৯ সালে চা শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরি পুণনির্ধারণে মজুরি বোর্ড গঠিত হয়।
মজুরি বোর্ড গঠনের পর চা-শ্রমিকেরা আশা করেছিলেন, মজুরি বোর্ড জীবনযাপনের ব্যয়, জীবনযাপনের মান, উৎপাদনশীলতা, মুদ্রাস্ফীতিসহ সব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে নতুন মজুরি হারের সুপারিশ করবে।
আরও পড়ুনঃ করোনা আতঙ্কে হবিগঞ্জে ২৩ চা বাগানের শ্রমিকরা স্বেচ্ছা ছুটিতে
শ্রম আইনের ১৩৯(২) ধারা অনুযায়ী, মজুরি বোর্ড গঠনের ছয় মাসের মধ্যে নতুন সুপারিশ দেয়ার কথা। কিন্তু প্রায় এক বছর ৮ মাস পর গত ১৪ জুন চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১১৭ টাকা নির্ধারণের সুপারিশ করে নিম্নতম মজুরি বোর্ডের ওয়েবসাইটে প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে মুদ্রাস্ফীতি, দ্রব্যমূল্য, জীবনযাপনের মানকে গুরুত্ব দেয়া হয়নি, যা অগ্রহণযোগ্য।
চা শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা আবু জাফর আরও বলেন, দেশের ১০ লক্ষাধিক চা জনগোষ্ঠীর পক্ষ থেকে প্রত্যাশা করে চা শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরি নির্ধারণে গঠিত মজুরি বোর্ড এই আপত্তিপত্র বিবেচনায় নিয়ে জারিকৃত প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার করবে। চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি নূন্যতম ৫০০ টাকা নির্ধারণ, অতিরিক্ত উৎপাদনের জন্য দ্বিগুণ মজুরি প্রদান, রেশনের পরিমাণ বৃদ্ধি, কৃষিভূমির জন্য রেশন কর্তন বন্ধ, চিকিৎসা ও বাসস্থানের মানোন্নয়ন এবং তিন মাসের অধিককাল কর্মরত চা শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী বিবেচনার নির্দেশনা দিয়ে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।
আরও পড়ুনঃ চট্টগ্রামে বন মামলায় চা বাগানের ২ ম্যানেজার কারাগারে
রত্না বসাকের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য আরও দেন চা শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা আবু জাফর, ফেডারেশনের সন্দীপ রঞ্জন, রহিমা বেগম, অজিতা ন নায়েক ,সবিতা, কলি, চামনি রায় প্রমুখ।