সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে রাতের আধারে রাস্তা থেকে বাড়িতে নিয়ে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার মধ্য রাতে এই ঘটনাটি ঘটেছে।
নিহত যুবকের নাম মো. সাকিব মিয়া (২৫)। তিনি উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের ঘাগটিয়া টেকেরগাঁও গ্রামের খাটো মজিবুর রহমানের ছেলে।
জানা যায়, উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের ঘাগটিয়া গ্রামের মোশারফ হোসনের সঙ্গে একই গ্রামের খাটো মজিবুর রহমানের দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দন্ধ চলে আসছিল। ইতোপূর্বে দুই পক্ষের মধ্যে আরও কয়েকবার রক্তক্ষয়ী সংর্ঘষের ঘটনাও ঘটেছে।
এছাড়া দুই পক্ষের মধ্যে থানায় একাধিক মামলাও রয়েছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে নিহত সাকিব বাড়ি থেকে চক বাজারে যাওয়ার কথা বলে বের হয়ে আসে। রাত ১টার দিকে সাকিবের পিতা খাটো মজিবুর রহমানের কাছে ফোন আসে সাকিবকে মোশারফের বাড়িতে মারপিট করছে প্রতিপক্ষের লোকজন।
আরও পড়ুন: ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ১, আহত ২
এ সংবাদ পেয়ে খাটো মজিবুর রহমান গ্রামের তৃতীয় পক্ষের দুইজনকে সঙ্গে নিয়ে মোশারফ হোসেনের বাড়িতে গিয়ে তার ছেলেকে ফেরত চান।
মোশারফের লোকজন সাকিবকে তার পিতার কাছে না দিয়ে উল্টো খাটো মজিবুরকে মারপিট করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে গেইট বন্ধ করে দেন।
পরে সংবাদ পেয়ে রাত দুইটার দিকে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মোশারফ ও মজিবুর রহমানের বাড়ি থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় সাকিবকে উদ্ধার করে।
গুরুতর আহত অবস্থায় মোশারফের লোকজন তাকে প্রথমে তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তাকে ভর্তি করে। পরে এখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তার অবস্থা মমূর্ষ দেখে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পাঠান।
হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর পর মঙ্গলবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাকিব মৃত্যু হয়।
নিহতের মা তেরাবজুন বেগম বলেন, সোমবার সন্ধ্যার দিকে চক বাজারে যাওয়ার কথা বলে সাকিব বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে তার ছেলেকে মোশারফের লোকজন রাস্তা থেকে ধরে বাড়িতে নিয়ে মারপিট করে হাত পা ভেঙ্গে মেরে ফেলেছে।
মোশারফ গংরা গত বছর আমার ছেলেকে রড দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছিল এবং আমার বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, আমার ছেলের খুনিদের বিচার চাই।
নিহতের বাবা খাটো মজিবুর রহমান বলেন, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে বাড়িতে নিয়ে পিটিয়ে দুই হাত-পা ভেঙে ফেলে। খবর পেয়ে রাত ১টার দিকে মোশারফের বাড়িতে গিয়ে তাদের হা পা ধরে আকুতি মিনতি করেছি ছেলেকে উদ্ধারের জন্য। কিন্তু তারা আমার ছেলেকে ফেরত না দিয়ে উল্টো আমাকে মারপিট করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়।
পরে পুলিশ এসে আমার ছেলেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাটায়। সকালে শুনি আমার ছেলে মারা গেছে।
মোশারফ হোসেন বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, গত কিছুদিন আগে আমার ছোট ভাই মোশাহিদের সরীলে পেট্রোল দিয়ে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল সাকিব।
পরে বিষয়টি তার বাবাকে জানালে তিনি বলেন, আমার ছেলে মানসিক রোগী। গতরাত ১ টার দিকে আমার বাড়ির গেইটের বাহিরে এসে ঘরের বেড়া এবং গেইটে লাথি মারতে থাকে এবং পেট্রোল দিয়ে আগুন লাগিয়ে দিবে বলে চিৎকার চেচামেচি করতে থাকে।
পরে আমরা গেইটের ভিতর থেকে চিৎকার দিলে আশ পাশের মানুষ ডাকাত ডাকাত বলে তাকে মারপিট করে।
এক পর্যায়ে তার বাবা এসে তাকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে হাসপাতালে যান।
তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ ইফতেখার হোসেন বলেন, সাকিব নামে একজনকে প্রতিপক্ষের লোকজন বাড়িতে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে বলে শুনেছি।
তিনি আরও বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ রয়েছে। এছাড়া এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশ চেষ্টা করছে।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় কাপড়ের দরদামকে কেন্দ্র করে ছুরিকাঘাতে দুই যুবক নিহত
লক্ষ্মীপুরে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সাবেক দুই নেতাকে গুলি করে হত্যা