পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের কেন্দ্রীয় অক্সিজেন ব্যবস্থা চালু করার কাজ খুব ধীরগতিতে চলছে। এতে করোনা রোগীদের মাঝে অক্সিজেন সংকটের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। করোনা ইউনিট স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ সময়মত না পাওয়াই এই ধীরগতির কারণ বলে জানায় স্বাস্থ্য বিভাগ।
তবে চলতি মাসে বা আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে সিলিন্ডার দিয়ে আপাতত কেন্দ্রীয় অক্সিজেন ব্যবস্থা চালু করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এটা চালু হলে একই সাথে আরও ২০ জন করোনা আক্রান্ত রোগীকে এই ব্যবস্থায় অক্সিজেন সরবরাহ করা সম্ভব হবে। বর্তমানে এই হাসপাতালে করোনা রোগীদের জন্য ২০টি শয্যা রয়েছে। আরও শয্যা বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ ঈদের দিন বেনাপোল দিয়ে ১৮০ মেট্রিক টন অক্সিজেন আমদানি
বৃহস্পতিবার দুপুরে পঞ্চগড় জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত এক জরুরি সভায় কমিটির সদস্য সচিব সিভিল সার্জন ডা. ফজলুর রহমান এসব তথ্য জানান।
সভায় জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত সম্রাট জানান, ‘আমি শুরু থেকেই অক্সিজেন প্লান্ট স্থাপনের দাবি জানিয়ে আসছি।’ তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, অধিক সংক্রমণের ১১ টি জেলার মধ্যে পঞ্চগড় রয়েছে। কিন্তু আজও এখানে অক্সিজেন প্লান্ট চালু হয়নি। কোথায় গলদ? কেন ধীরগতি? তিনি প্রশ্ন করেন।
আরও পড়ুনঃ সিলেটে কল দিলেই মিলছে অক্সিজেন সেবা
সিভিল সার্জন ডা. ফজলুর রহমান জানান, ‘পঞ্চগড় জেলা সদরের আধুনিক সদর হাসপাতালে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন ব্যবস্থা চালু করার কার্যক্রমে ধীরগতির কারণে করোনা রোগীদের মাঝে অক্সিজেন সংকটের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এটা ইউনিসেফের মাধ্যমে একটি কোম্পানী নির্মাণ করছে। কিন্তু জুন থেকে কাজ শুরু করলেও তারা এখনো কাজ শেষ করতে পারেনি। এটা সিভিল সার্জনের কাজের মধ্যে পড়ে না। তারা রেডি করে দিবে আমরা চালু করবো। পঞ্চগড় এখন অধিক সংক্রমণের জেলা। কাজেই দ্রুতই পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সিস্টেম চালু করা দরকার। পঞ্চগড়ে এ পর্যন্ত ৪১ জন করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।‘
আরও পড়ুনঃ অক্সিজেন বহনকারী ছেলেকে আটক: সাতক্ষীরায় সেই এএসআই প্রত্যাহার
জেলা প্রশাসক মো. মো. জহুরুল ইসলাম জানান, ‘করোনা মোকাবেলায় জেলা প্রশাসন,স্বাস্থ্য বিভাগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মাঠে কাজ করছেন। শুক্রবার থেকে সবাইকে কঠোর লকডাউন মেনে চলতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে হবে। সবাইকে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। লকডাউন না মানলে জেল জরিমানা করা হবে। এজন্য মাঠে থাকবে সেনাবাহিনী,পুলিশ, বিজিবিসহ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা। জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির জরুরি সভা করে এসব সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এজন্য ব্যাপক প্রচার চালানো হচ্ছে।‘
জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলামের সঞ্চালনা ও সভাপতিত্বে সভায় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত সম্রাট, পৌর মেয়র জাকিয়া খাতুন, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম, পাঁচ উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসাররা, পঞ্চগড় প্রেসক্লাবের সভাপতি সফিকুল আলমসহ কমিটির অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।