ফরিদপুরের মধুখালীতে এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বুধবার দুপুরে ওই গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
নিহত ঝর্ণা বেগম (২৬) উপজেলার মীরের কাপাষহাটিয়া গ্রামের আলতু শেখের স্ত্রী।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কামালদিয়া ইউনিয়নের মীরের কাপাষহাটিয়া গ্রামের আমজাদ শেখের ছেলে আলতু শেখের (৩০) সাথে একই এলাকার জবেদ আলীর কন্যা ঝর্ণার বেগমের (২৬) মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে দীর্ঘ ৮ বছর আগে। ওই সময়ই তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই তাদের দুজনের মধ্যে বনিবনা হচ্ছিল না। এভাবেই চলছিল তাদের সংসার জীবন। তাদের সংসারে ৪ বছরের ছেলে ও ৭ বছরের মেয়ে সন্তান রয়েছে। মাঝে মধ্যেই স্বামী আলতু শেখ স্ত্রী ঝর্ণা বেগমকে মারধর করতো।
আরও পড়ুন: রান্না করতে গিয়ে কুড়িগ্রামে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে গৃহবধূর মৃত্যু
জানা গেছে, এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার দিবাগত রাতে আলতু শেখ ও ঝর্ণা বেগমের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে স্বামী আলতু শেখ স্ত্রী ঝর্ণা বেগমকে বেদম মারপিট করে। বুধবার সকালে বাড়ির সকলে দেখতে পায় ঝর্ণা বেগমের মরদেহ ঘরের মধ্যে পড়ে আছে। পরে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে স্বামীর দেয়া আগুনে দগ্ধ গৃহবধূর মৃত্যু
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. নুরুল ইসলাম জানান, আলতু শেখের সাথে ৮ বছর আগে ঝর্ণা বেগমের প্রেমের সম্পর্কের মাধ্যমে বিয়ে হয়। বর্তমানে তাদের সংসারে দুটি সন্তান রয়েছে। স্ত্রীকে মারপিটের কথা শুনেছি। মেয়েটিকে হত্যা করা হয়েছে, না কি সে আত্মহত্যা করেছে বিষয়টি জানতে ওদের বাড়িতে গিয়েছিলাম, কিন্তু বুঝতে পারছি না। সংবাদ পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে নিয়ে গেছে।
ঝর্ণার মামা মো. বিশু খাঁ বলেন, ঝর্ণাকে নির্যাতন করে মেরে মুখে বিষ ঢেলে দেয়া হয়েছে। সে নিজের ইচ্ছায় প্রেম করে আলতুর সাথে ৮ বছর আগে বিয়ে করে। বিয়ের পর থেকেই তাদের মধ্যে বিবাদ শুরু হয়। ঝর্ণাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের সাথে আলতু ও পরিবারের সদস্যরা জড়িত। এই হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি জানাই।
এদিকে আলতু শেখের বাড়িতে গিয়ে তাকে এবং তার পরিবারের সদস্যদের পাওয়া যায়নি। এ কারণে তাদের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
আরও পড়ুন: রুটি বানাতে দেরি, থাপ্পড়ে গৃহবধূর মৃত্যু
মধুখালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রথিন্দ্র নাথ তরফদার জানান, খবর পেয়ে গৃহবধূ ঝর্ণার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেলেই বোঝা যাবে এটি আত্মহত্যা না হত্যা করা হয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের হয়েছে।