শেরপুরে কঠোর লকডাউন কার্যকর করতে তৃতীয় দিনেও মাঠে বেশ তৎপর ছিল প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
শনিবার দুপুরে শহরের মোবারকপুর এলাকায় বিধিনিষেধ অমান্য করে চালু রাখায় নুরানী তালিমুল কোরআন মোয়াল্লিম প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নামে একটি মাদ্রাসা বন্ধ করে দেওয়া হয়। সেইসাথে মাদ্রাসাটি খোলা রাখার দায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে এর পরিচালক হারুন-অর-রশীদকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শেরপুর সদর এসিল্যান্ড তনিমা আফ্রাদ এ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। তিনি জানান, লকডাউনে সরকারি নির্দেশনা না মানায় মাদ্রাসাটির দায়িত্বরত হারুন-অর-রশীদকে দন্ডবিধি ১৮৬০ সালের ২৬৯ ধারা অনুয়ায়ী ১০ দশ হাজার টাকা জরিমানা এবং ৭ দিনের জন্য মাদ্রাসাটি সিলগালা ঘোষণা করা হয়। অভিযানে সহায়তা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আকলিমা আক্তার, শেরপুরে সেনাবাহেনীর দায়িত্বরত মেজর মো. ইমতিয়াজ কবির।
আরও পড়ুন: বিয়ে করায় ছেলেদের হাতে খুন হলেন বাবা
স্থানীয়রা জানান, চট্রগ্রাম থেকে পরিচালিত নুরানী তা’লীমুল কোরআন বোর্ড বাংলাদেশ-এর সিলেবাসে শহরের মোবারকপুর এলাকায় এ মোয়াল্লেম কেন্দ্রটি ২ বছর ধরে চলছে। ভয়াবহ করোনার মাঝেও সরকারি বিধিনিষেধ ও স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করে মাদ্রাসাটি চালু রাখা হয়। সেখানে একটি কক্ষে ছোট ছোট শিশুদের এবং আরেকটি বড় হলরুমে প্রায় শতাধিক বয়স্ক ব্যক্তিকে নুরানী প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
এছাড়া শহরের বিভিন্ন এলাকায় এবং সদর উপজেলার কুসুমহাটি বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদাত পরিচালনা করে বিধিনিষেধ অমান্য করে অযথা ঘুরাফেরা ও মাস্ক না পড়ার দায়ে তিন হাজার টাকা জরিমানা এবং ৪ জনকে আটক করা হয়। এদিন জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) একটি দল শহরের আনাচে-কানাচে এবং জেলার বিভিন্ন উপজেলা সদরে মোটর সাইকেল টহলের মাধ্যমে করোনা সচেতনা সৃষ্টি ও লকডাউনের বিধিনিষেধ কার্যকরের চেষ্টা করে।
আরও পড়ুন: লকডাউনে সুন্নতে খৎনার অনুষ্ঠান, খাবার গেল এতিমখানায়
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তোফায়েল আহমেদ জানান, সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধ অমান্য করার দায়ে শুক্রবার পর্যন্ত জেলায় ১৮টি ভ্রাম্যমাণ আদালত ২৩৩টি অভিযান পরিচালনা করে। এসময়ে ১৩১টি মামলায় ৮০ হাজার ৯০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
শনিবারও লকডাউনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চলছে। লকডাউন বাস্তবায়নে র্যাব-পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর ১০০ সদস্য, ২ প্ল্যাটুন বিজিবি ও এক প্লাটুন ব্যাটালিয়ান আনসার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: লকডাউনে বিয়ে : বর ও কনে পক্ষকে জরিমানা
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘লকডাউন কার্যকর করতে শহরের প্রতিটি প্রবেশ মুখে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। সেইসাথে পুলিশের টিমও কাজ করছে। অপ্রয়োজনে যাতে কেউ বাইরে বের হতে না পারে, সেই দিক নিশ্চিত করা হচ্ছে।’