ঈদের আর মাত্র একদিন বাকি। রোজার শেষে এ মূহুর্তে জমে উঠেছে খুলনার ঈদ বাজার। শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে খুলনার বিপণি বিতান ও মার্কেটগুলো।
এছাড়া ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় হওয়ায় দম ফেলার ফুসরত নেই বিক্রেতাদের।
এদিকে এক মাস সিয়াম সাধনার পর পরিবারের সকলে মিলে মিশে নতুন পোশাকে ঈদের বাড়তি আনন্দটুকু ভাগাভাগি করে নিতে ব্যস্ততম নগরী খুলনার প্রাণকেন্দ্রে গড়ে ওঠা সব আধুনিক বিপণি বিতান, শপিংমল, মার্কেটসহ ভ্রাম্যমান দোকানগুলো এখন চলছে কেনাকাটার মহোৎসব।
খুলনার বিপনীবিতান, শপিংমল, মার্কেটগুলোতে শিশু, নারী-পুরুষ, তরুণ-তরুণী, আবাদ-বৃদ্ধ সব বয়সী মানুষের আনাগোনায় মুখরিত ছিল।
এছাড়া ঈদকে ঘিরে কেউ বাচ্চাদের পোশাক, কেউ শাড়ী বা থ্রি-পিস, কেউবা আবার প্যান্ট, শার্ট পাঞ্জাবি কিনতে ব্যস্ত ছিল।
আরও পড়ুন: গাইবান্ধায় এক টাকায় ঈদ বাজার
বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদে ঘিরে তরুণেরা পাঞ্জাবি, তরুণীরা সিল্ক বা জামাদানি এবং মেয়েদের জন্য ফোরাক কিনছে। প্রতি বছর ভারতীয় সিরিয়ালের নামের পোশাক চাহিদা বেশি থাকলেও এবছর চাহিদা কম।
তবে অনেকেই সারারা, গারারা ও আনারকলি কিনছেন বলে জানিয়েছেন।
নগরীর নিউ মার্কেট, সেইফ এন্ড সেইভ, স্বপ্নীল, ইয়োলো, জলিল টাওয়ার, খুলনা শপিং কমপ্লেক্স, বড় বাজার, রব সুপার মার্কেট, শহীদ সোহরাওয়ার্দী বিপণি বিতান, মশিউর রহমান মার্কেট, দরবেশ চেম্বার, এশা চেম্বার, আকতার চেম্বার, রেলওয়ে মার্কেটসহ বিভিন্ন বিপণি বিতান, খালিশপুর সুপার মার্কেট, দৌলতপুর বাজারের মিলন বস্ত্রালয়, আশা বস্ত্রালয়, আদিব বস্ত্রালয়, জাবিরা ফ্যাশন, সাতরং, মাইশা ফ্যাশন, এস.আর বস্ত্রবিতান, ড্রেস কোড, শ্যামা বস্ত্রালয়, প্রবীর ক্লথ স্টোর, চৌধুরী এন্টার প্রাইজ, হাসনাত এন্টার প্রাইজ, মাতৃবন্ত্রালয়, সাইম নিউ কালেকশন, আচল ফ্যাশন, জে.কে শপিংমল, অমি শপিংমল, লিবার্টি সু, ওয়েলকাম সু, শুভেচ্ছা কসমেটিক্স, সাবিনা, আরিশা কসমেটিক্সসহ ফুলবাড়ীগেট, শিরোমনি নিউ মার্কেট, বৈশাখি সুপার মার্কেটসহ স্থানীয় এলাকার বিপনীবিতান, শপিংমলগুলোতে ঈদের কেনাকাটা করতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে।
প্রায় সব বয়সী মানুষ এমনই দৃশ্য দেখা গেছে।
বিভিন্ন বিপণি বিতান, শপিংমল, মার্কেট সমূহে সারি সারি দৃষ্টিনন্দনভাবে সাজানো সকল বয়সী ক্রেতাদের জন্য আধুনিক ডিজাইন ও বাহারি রঙের পোশাক, জুতা-সেন্ডেল, নামি দামি কোম্পানির প্রসাধনী, ব্যাগ, বেল্টসহ ঘড়ি ও চশমার দোকানও। ঈদ যত নিকটে আসছে, ততই ক্রেতা বাড়ছে।
দিনের তীব্র অসনীয় গরম উপেক্ষা করে বিরতিহীন কেনাকাটা চলছে সকাল হতে দীর্ঘ রাত পর্যন্ত।
পোশাক বিক্রেতা কবির হোসেন জানান, ছেলেরা বেশি পাঞ্জাবি কিনছে। রয়েছে ইন্ডিয়ান ব্র্যান্ড, গুটি ও টিস্যু। তবে কাবলি চাহিদা বেশি। তাছাড়া প্রতি বছর ইন্ডিয়ান সিরিয়ালের ড্রেস নাম ধরে ক্রেতারা চেয়ে নিলেও এবছর চাহিদা কম। তবে সারারা গারারা ও আনারকলি বেশি চলছে।
প্রসাধনী বিক্রেতা ইলিয়াস হোসেন জানান, আমার দোকানে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্রসাধনী তুলেছি ঈদ উপলক্ষে। তাছাড়াও মেহেদী, আইনারান, ফ্রেশ, বিভিন্ন ডিজাইনের চুড়ি, গলার হার, কানের দুল, চুলে খোপা, লিপস্টিকসহ অন্যান্য প্রসাধনীর বিক্রি করছি। দিনজুড়ে কেনাবেচার চাপ বেড়েছে।
মকবুল হোসেন নামের এক ক্রেতা জানান, দেখতে দেখতে ঈদ চলে আসলো। হাতে আর সময় কই? নিজের জন্য না হলেও বাচ্চাদের জন্য কেনাকাটা করতে হবে। তাই আগেই কেনাকাটা করতে এলাম। কারণ ঈদের আগেরদিন আগে মার্কেটে পা রাখা যাবে না। যদিও গরমের মধ্যে খুব কষ্ট হচ্ছে।
খুলনা আঞ্চলিক আওহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ আমিরুল আজাদ এ জানান, গরম কাল চলছে, তাপমাত্রা ক্রমশই বাড়বে এটাই স্বাভাবিক।
তাছাড়া সাধারণত এপ্রিল মে মাসে গরমের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে থাকে।
তিনি আরও বলেন, বৃষ্টিপাত হলে গরমের অনুভূতি কিছুটা কমবে। বৃষ্টি না থাকায় তীব্র গরম অনুভূত হচ্ছে। বুধবার (১৯ এপ্রিল) খুলনার সর্ব্বোচ তাপমাত্রা ছিল ৩৮.০ ডিগ্রী সেলসিয়াস।