সাভারে ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও স্বজনদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় রোগীর স্বজনদের চারজন আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) রাতে সাভার থানা স্ট্যান্ডের পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চতুর্থ তলায় এমন ঘটনা ঘটেছে।
এ ঘটনায় আহতরা হলেন- মাদরাসা শিক্ষক মোশাররফ হোসেন, তার স্ত্রী রূপালী বেগম ও ছেলে শিবলী আহম্মেদ। এ ছাড়াও আহত আরেকজনের পরিচয় জানা যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসা নিতে আসেন ব্যাংক কলোনি এলাকার আঁখি নামে এক নারী। তিনি সাভার উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকুর রহমান আতিকের স্ত্রী পরিচয় দিয়ে পরে এসে আগে সিরিয়াল চাওয়ায় বাধা দেন কয়েক রোগী। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই রোগীকে মারধর শুরু করেন আঁখি।
আঁখি রোগীকে মারধর করলে বাধা দেন মাদরাসা শিক্ষক মোশাররফ হোসেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আঁখি ছাত্রলীগ নেতা আতিককে ফোন করলে ঘটনাস্থলে আসেন আতিকের ব্যক্তিগত সহকারী নজরুল, উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি জামানসহ ১০-১৫ জন।
আরও পড়ুন: সাভারে ১৬ বছর পর পলাতক আসামি গ্রেপ্তার
পরে মোশাররফ হোসেন নিজেকে মাদরাসার শিক্ষক ও ব্যাংক কলোনি মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল্লাহর আপন ছোট ভাই পরিচয় দিয়ে সবাইকে শান্ত হতে বলেন।
এ সময় মোশারফকে মারধর ও হুমকি দিয়ে একজন বলেন, ‘তুই জানিস না, আঁখি আপা আতিক ভাইয়ের কী হয়?’
এই কথা শুনে শিক্ষক মোশাররফ হোসেনের ছেলে শিবলী আহম্মেদ এগিয়ে এসে প্রতিবাদ করেন। তাকে ধাক্কা দিয়ে কিল ঘুষি মারেন নজরুল। এসময় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এলোপাথাড়ি শিবলীকে পেটানো শুরু করেন।
চোখের সামনে ছেলেকে মারতে দেখে শিবলীর মা রূপালী বেগম এগিয়ে আসার পর তাকেও সজরে ধাক্কা দিলে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন।
খবর পেয়ে হাসপাতালের ম্যানেজার আবদুল খালেক এসে শিবলী আহমেদকে উদ্ধার করেন। পরে আহত অবস্থায় তাকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর পক্ষ থেকে সাভার মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাভার মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাহমুদুল হাসান। তিনি জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ।
এদিকে এর আগে মারধরের ঘটনার একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। মুহূর্তেই বিষয়টি চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এ হামলায় দোষীদের বিচার দাবি করেছেন ভুক্তভোগী পরিবারের লোকজন।
এ বিষয়ে ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত আঁখি ও সাভার উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকুর রহমান আতিকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
সাভারের পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগীকে পেটানোর ব্যাপারে জানতে চাইলে সাভার মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) নয়ন কারকুন বলেন, আমরা ঘটনাটি শুনেছি। অভিযোগ পেয়ে ওসি স্যারের নির্দেশে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ। এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।
তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় সাভার মডেল থানায় মামলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে সরকারি খাদ্যগুদামে দুই প্রহরীর মারামারি, নিহত ১