নতুন মৌসুমে অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলতে গিয়েই বারবার নিজেদের হারিয়ে ফেলছে বর্তমান লা লিগা চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদ। প্রথম ম্যাচে মায়োর্কার মাঠ থেকে জয় আনতে ব্যর্থ হওয়া দলটি তৃতীয় ম্যাচেও একইরকমভাবে হতাশ হয়েছে।
বুধবার রাতে স্পেনের কানারি দ্বীপের গ্রান কানেরিয়া স্টেডিয়ামে তারকায় ঠাসা রিয়াল মাদ্রিদকে ১-১ গোলের ড্রয়ে রুখে দিয়েছে পুঁচকে লাস পালমাস।
ম্যাচজুড়ে বল দখলের লড়াইয়ে রিয়ালকে সমানে চ্যালেঞ্জ দিয়ে গেছে স্বাগতিকরা। তাছাড়া আক্রমণাত্মক রক্ষণ গড়ে চ্যাম্পিয়নদের আক্রমণগুলোও একের পর এক প্রতিহত করে গেছে তারা। শেষ মুহূর্তে গোল পেয়ে ম্যাচটি জিতে নেওয়ারও ভালো সম্ভাবনা জাগায় তারা, তবে ভাগ্য রিয়ালের পক্ষে থাকায় ১ পয়েন্ট নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে লুইস মিগেল কারিয়নের শিষ্যদের।
এদিন ম্যাচ শুরুর পর পঞ্চম মিনিটেই এগিয়ে যায় লাস পালমাস। হঠাৎ আক্রমণে উঠে অরেলিয়েঁ চুয়ামেনিকে পরাস্ত করে আলবার্তো মলেইরোকে পাস দেন অলিভার ম্যাকবার্নি। পাস ধরে প্রথম শটেই লক্ষ্যভেদ করেন ২০ বছর বয়সী এই তরুণ উইঙ্গার।
গোল খেয়ে আক্রমণাত্মক ফুটবলে লাস পালমাসকে চেপে ধরার চেষ্টা করে রিয়াল মাদ্রিদ। তবে সম্মিলিত প্রচেষ্টা, কাউন্টার প্রেসিং ও জমাট রক্ষণে রিয়ালের সেসব প্রচেষ্টা অঙ্কুরেই বিনষ্ট করে দিতে থাকে স্বাগতিকরা। শুধু তা-ই নয়, প্রতিপক্ষের পা থেকে বল ছিনিয়ে নিয়ে পজেশনাল ফুটবলে বলের ওপর নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার চেষ্টা করে লাস পালমাস, পাশাপাশি আক্রমণ তৈরির চেষ্টা করে রিয়ালকেও অস্বস্তিতে রাখে তারা।
২৫তম মিনিটে প্রথম গোলে শট নেয় রিয়াল মাদ্রিদ। ডি-বক্সের সামান্য বাইরে থেকে ফাউল আদায় করেন ভিনিসিউস। সেখান থেকে ফেদেরিকো ভালভার্সে দারুণ একটি ফ্রি কিক নিলেও অসাধারণ দক্ষতায় শটটি প্রতিহত করে ব্যবধান ধরে রাখেন লাস পালমাস গোলরক্ষক জ্যাসপার সিলিসেন।
২৮তম মিনিটে আক্রমণে উঠে বক্সের বাইরে থেকে শট নেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। তবে শটে জোর না থাকায় সহজেই বলটি লুফে নেন সিলিসেন।
মিনিট দশেক পর বক্সের বেশ বাইরে থেকে দূরপাল্লার শট হানেন আন্টোনিও রুয়েডিগার, তবে বাঁ পাশের পোস্টঘেঁষে বল গোলের ঢোকার মুখে ঝাঁপিয়ে হাত প্রসারিত করে সেটি বাইরে বের করে দেন সিলিসেন।
আরও পড়ুন: এমবাপ্পে না পারলেও অভিষেকে গোল এন্দ্রিকের, জয়ে ফিরল রিয়াল
এরপর ৪১তম মিনিটে রিয়াল মাদ্রিদের আরও একটি পাল্টা আক্রমণ সঠিক সময়ে এগিয়ে এসে শেষ পর্যন্ত নিস্ফল করে দেন ৩৫ বছর বয়সী এই সাবেক বার্সা গোলরক্ষক।
প্রথমার্ধের ত্রিশ মিনিটের পর থেকে একের পর এক গেম ডেভেলপ করে সমতায় ফেরার চেষ্টায় ব্রতী হয় রিয়াল মাদ্রিদ। তবে জমাট রক্ষণ ও সিলিসেনের নৈপুণ্যে তাদের সব প্রচেষ্টা ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার আগেই নিস্ক্রিয় হয়ে যায়। ফলে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় লাস পালমাস।
প্রথমার্ধে রিয়ালের ছয়টি শটের তিনটি ছিল লক্ষ্যে, অন্যদিকে লাস পালমাস দুটি শটের একটি লক্ষ্যে রাখতে পারে, যেটি থেকে গোল আদায় করে তারা।
তবে বল দখলের লড়াইয়ে একদমই পিছিয়ে ছিল না লাস পালমাস। রিয়ালের ৫২ শতাংশ সময় বলের ওপর নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি ৪৮ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে লা লিগা চ্যাম্পিয়নদের সমানে টক্কর দেয় তারা।