এই মাসের মধ্যেই এক কোটি ডোজ টিকা আসবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক এমপি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে দেশের করোনা ও ডেঙ্গু সংক্রমণ নিয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এই তথ্য জানান।
মন্ত্রী বলেন, সারাদেশে আমাদের টিকা কার্যক্রম চলছে। এটি চলমান থাকবে। এক সপ্তাহের মধ্যে ৫৪ লাখ ডোজ টিকা আসবে, পরের মাসে আবার ৫০ লাখ ডোজ আসবে। সবমিলিয়ে এই মাসেই এক লাখ ডোজ টিকা আসবে।
আরও পড়ুন: চীন থেকে আসবে সাড়ে ৭ কোটি ডোজ টিকা: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
তিনি বলেন, পৌনে দুই কোটি মানুষকে টিকা দেয়া হয়েছে। কোটি কোটি লোক নিবন্ধন করেছে। সকলেরই টিকা প্রয়োজন। ২৬-২৭ কোটি টিকা লাগবে। আমরা চেষ্টা করছি। পর্যায়ক্রমে সবাই টিকা পাবে, ধৈর্য্য ধরতে হবে।
জাহিদ মালেক বলেন, টিকা নিয়ে আন্তর্জাতিক রাজনীতি চলছে। বড় বড় দেশগুলো তাদের জনসংখ্যার ৪-৫ গুণ বেশি টিকা বানিয়ে মজুদ করেছে, আমরা সাধ্যমত কিনে আনার চেষ্টা করছি।
তিনি আরও বলেন, চিকিৎসা ব্যবস্থাপনার ওপর চাপ কমাতে সংক্রমণের উৎস বন্ধ করতে হবে। করোনা নিয়ন্ত্রণ না করলে কঠিন পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে। করোনা নিয়ন্ত্রণ না হলে অর্থনীতি খারাপ হবে। করোনা নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলে মৃত্যু বাড়বে, অর্থনীতি ভেঙ্গে পড়বে। দারিদ্রতা বাড়বে। দেশে কর্মহীন হয়ে পড়বে মানুষ।
মন্ত্রী আরও যোগ করেন, সংক্রমণ কমে আসছে, মৃত্যু হার আরও কমাতে হবে। সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: রোগীর চাপ সামাল দিতে হোটেল খোঁজা হচ্ছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
জাহিদ মালেক বলেন, সিনোফার্মের ৬ কোটি টিকার বিষয়ে সপ্তাহ খানেক আগে প্রধানমন্ত্রী থেকে অনুমোদন নিলাম। আশা করি টিকার সংকট হবে না। আমাদেরকে সবার আগে চিকিৎসক-নার্সসহ যারা ফ্রন্টলাইনার তাদেরকে টিকা দিতে হয়েছে। আমরা ছাত্রদের জন্য টিকার ব্যবস্থা করেছি। গর্ভবতী মায়দের জন্যও টিকার ব্যবস্থা করেছি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম বলেন, মহামারি করোনাভাইরাস যাতে আর না বাড়ে যে জন্য সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। করোনা বেড়ে গেলে সামাল দেয়া যাবে না।
তিনি বলেন, আমরা ডিএনসিসিতে এক হাজার শয্যার কোভিড ডেডিকেটেড হাসাপাতাল তৈরি করেছি। অতি সম্প্রতি সময়ে বঙ্গমাতা ফিল্ড হাসপাতাল তৈরি করা হয়েছে।
প্রতিটি জিনিসেরই একটা সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আমাদেরও রয়েছে। এর বাইরে গিয়ে আর হাসাপাতালে শয্যা বাড়ানো সম্ভব হবে না।
অনুষ্ঠানে অন্যান্য বক্তারা বলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগ ও সিটি কর্পোরেশনের সঠিক তৎপরতা না থাকায় ডেঙ্গু ভয়াবহ আকারে ছড়াচ্ছে। এজন্য করোনা মহামারির মধ্যে ডেঙ্গু চিকিৎসা একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য তাদের। এই মৌসুমে একসাথে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া ও করোনা আক্রান্ত রোগী মিলছে বলেও জানান চিকিৎসকরা। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ না করা গেলে চিকিৎসা ব্যবস্থাপনার ওপর চাপ আরও বাড়বে বলেও আশঙ্কা তাদের।
আরও পড়ুন: গার্মেন্টস খোলায় সংক্রমণ আরও বাড়ার আশঙ্কা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর
এজন্য ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্টদের আরো তৎপর হওয়ার আহ্বান তাদের। এসময়, জ্বর হলে আতংকিত না হয়ে চিকিৎসকের নির্দেশনা নিয়ে ডেঙ্গু ও করোনা পরীক্ষার করানোর পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। এছাড়াও সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান তাদের।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ সোসাইটি অফ মেডিসিনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ বিল্লাল। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য সচিব লোকমান হোসেন মিয়া, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাশার খুরশীদ আলম, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ বি এম আব্দুল্লাহ এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা।