সংঘর্ষে লিপ্ত থাকাদের নিবৃত করতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক ও সাংবাদিক লাঞ্ছিত হয়েছেন। এছাড়া শ্রদ্ধাঞ্জলির পুষ্পমাল্য ভেঙে পায়ে মাড়ানোরও অভিযোগ উঠেছে।
দুপুরে ক্যাম্পাসস্থ মুক্ত বাংলা চত্ত্বরে এ ঘটনায় অভিযুক্তরা ঘটনার পরপরই নিজেদের ভুল স্বীকার করে সাংবাদিকদের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর নামে বানান ভুল: ইবি রেজিস্ট্রারকে কারণ দর্শানোর নোটিশ
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ক্যাম্পাসে অবস্থিত মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম স্মারক ভাস্কর্য 'মুক্ত বাংলা'য় শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ নিয়ে কর্মকর্তাদের দুটি পক্ষ বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। পরে তা মারামারিতে রূপ নেয়। এসময় তাদের হাতে বাঁশ ও লাঠি দেখা যায়।
এর আগে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনসহ একে একে শিক্ষক সমিতি, কর্মকর্তা সমিতি, বঙ্গবন্ধু পরিষদ পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। পরে সকাল পৌণে ১১টার দিকে কর্মকর্তা সমিতি থেকে বেরিয়ে এসে নতুন গড়া অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে কয়েকজন কর্মকর্তা ফুল দিতে গেলে কর্মকর্তা সমিতির সদস্যরা বাধা দেন।
আরও পড়ুন: করোনার ছুটির মধ্যে পরীক্ষা নেবে ইবি
কর্মকর্তা সমিতির অভিযোগ অফিসার্স ইউনিটির কর্মকর্তারা জুতা নিয়ে বেদিতে ফুল দেয়। এসময় তারা বাধা দিতে গেলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে কর্মকর্তা সমিতির ধাওয়া খেয়ে ক্যাম্পাস ত্যাগ করে অফিসার্স ইউনিটের কর্মকর্তারা।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মণ বলেন, ‘আমার ২২ বছরের শিক্ষকতা জীবনে কখনো এমন ঘটনার সৃষ্টি হয়নি। এ ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক, অনাকাঙ্ক্ষিত এবং অপ্রত্যাশিত।’
‘আমি প্রশাসনের একজন ব্যক্তি হয়েও নিবেদন করব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হোক,’ বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: ইবির সাবেক শিক্ষার্থী তিন্নি হত্যা মামলার প্রধান আসামি গ্রেপ্তার
যোগাযোগ করা হলে উপাচার্য অধ্যাপক শেখ আবদুস সালাম বলেন, ‘আজ মহান বিজয় দিবসকে সামনে রেখে পুষ্পমাল্য প্রদানকালে একদল লোক অনাকাঙ্ক্ষিত ও বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করতে চেষ্টা করেছে। এ ধরনের পরিবেশ সৃষ্টিকারীদের আচরণ অনভিপ্রেত এবং শহীদদের প্রতি অবমাননার শামিল।’
এদিকে, জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের কমকর্তাদের এমন মারামারি ও পুষ্পমাল্য ভেঙে পায়ে মাড়ানোর ঘটনায় নিন্দার ঝড় বইছে।বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন, ছাত্রসংগঠন এই ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
ঘটনাটিকে ইবির ইতিহাসের জঘন্যতম ঘটনা হিসাবে আখ্যায়িত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সরব হয়েছেন সাবেক বর্তমান শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।