বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, দেশে এ বছর উল্লেখযোগ্য পরিমাণ চা উৎপাদিত হয়েছে। ২০২১ সালে দেশে ৯৬ দশমিক ৫১ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে। এর মধ্যে শুধুমাত্র দেশের উত্তরাঞ্চলেই রেকর্ড ১৪ দশমিক ৫৫ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত আসন্ন ৪ জুন দ্বিতীয় জাতীয় চা দিবস-২০২২ উপলক্ষে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিং বক্তব্য দেয়ার সময় এসব কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
এসময় তিনি বলেন, দেশে এখন বৃহৎ চা বাগানের সংখ্যা ১৬৭টি এবং ক্ষুদ্রায়তন চা বাগানের সংখ্যা ৮ হাজারেরও বেশি। দেশে চা উৎপাদনের বিপুল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে চায়ের ব্যবহার কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশে ঘরে ঘরে চায়ের ব্যবহার বাড়ছে, সে কারণে চায়ের উৎপাদন বাড়লেও সেভাবে আমরা রপ্তানি করতে পারছি না।
আরও পড়ুন: পঞ্চগড়ে চা বাগান ও জঙ্গল কেটে খোঁজা হচ্ছে বাঘ
চায়ের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে সরকার বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, চায়ের নতুন ও উন্নত জাত উদ্ভাবনে গবেষণা বৃদ্ধি করা হয়েছে। কৃষকদের চা চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, এত দিন শুধু দেশের পাহাড়ি অঞ্চল অর্থাৎ চট্রগ্রাম, মৌলভীবাজার ও সিলেটে চা উৎপাদিত হতো। এখন দেশের উত্তরাঞ্চল পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও ও লালমনিহাটের সমতল ভূমিতেও চা উৎপাদিত হচ্ছে। এতে করে অন্য ফসল চাষে অনুপযোগী জমিগুলোতে চা উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে। ফলে দেশে চা শিল্পের বিপুল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
তিনি বলেন, চা উৎপাদনের এ ধারা অব্যাহত থাকলে আমরা দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে বিপুল পরিমাণ চা রপ্তানি করতে পারবো।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ১৮৪০ সালে এখানে ব্যক্তি উদ্যোগে চা উৎপাদন শুরু হয়, তবে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে শুরু হয় ১৮৫৪ সালে সিলেটের মালনিছড়া চা বাগানে। চা বোর্ড প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৫১ সালে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫৭ সালের ৪ জুন থেকে ১৯৫৮ সালের ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত প্রথম বাঙালি হিসেবে চা বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। সে কারণেই ৪ জুনকে জাতীয় চা দিবস হিসাবে বেছে নেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, আগামী ৪ জুন, ২০২২ তারিখ বেলা ১১টায় ওসমানি মিলনায়তনে দ্বিতীয় বারের মতো জাতীয় চা দিবস উদযাপন করা হবে। এখানে আলোচনা সভার পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চা প্রদর্শন ও বিক্রয় করার ব্যবস্থা থাকবে।
আরও পড়ুন: করোনা আতঙ্কে হবিগঞ্জে ২৩ চা বাগানের শ্রমিকরা স্বেচ্ছা ছুটিতে