স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে মঙ্গলবার বলা হয়েছে, দেশের এক হাজার ৪০০ টিকাদান কেন্দ্র থেকে প্রতিদিন ৩ লাখ ৬০ হাজার টিকা দানের সক্ষমতা রয়েছে। গত ২৭ জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত সারাদেশে করোনার টিকা নিয়েছেন ১৩ লাখ ৫৯ হাজার ৬১৩ জন। যাদের মধ্যে পুরুষ ৯ লাখ ২৩ হাজার ৫১৬ জন এবং নারী চার লাখ ৩৬ হাজার ৯৭ জন।

এদিকে, রাজধানী ঢাকার ৪৬টি টিকাদান কেন্দ্রে গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ৩৪ হাজার ৪৪ জনকে টিকা দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে, এখন পর্যন্ত মোট এক লাখ ৮১ হাজার ৫৪৬ জনকে টিকা দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে এক লাখ ২২ হাজার ৮৮৩ জন পুরুষ এবং ৫৮ হাজার ৬৬৩ জন নারী রয়েছেন।

এর আগে, মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশে ব্যাপকভাবে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।

আরও পড়ুন: জরুরি ব্যবহারে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা ডব্লিউএইচও’র অনুমোদন

রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালসহ সারা দেশের এক হাজার পাঁচটি হাসপাতালে কোভিড-১৯ টিকা দেয়া হচ্ছে। টিকাদানের প্রথম দিন মোট ৩১ হাজার ১৬০ জনকে টিকা দেয়া হয় বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে টিকাদান সংক্রান্ত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল।

ভারতের উপহার হিসেবে সেরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ড টিকার ২০ লাখ ডোজ গত ২১ জানুয়ারি বাংলাদেশে এসে পৌঁছে। এরপর ২৫ জানুয়ারি সেরাম থেকে বাংলাদেশের ক্রয় করা কোভিশিল্ডের প্রথম চালানের ৫০ লাখ ডোজ নিরাপদে ঢাকায় আসে। করোনার টিকা নিতে চাইলে www.surokkha.gov.bd ওয়েবসাইটে গিয়ে নিবন্ধন করতে হবে।

আরও পড়ুন: টিকার দ্বিতীয় ডোজ ৮ থেকে ১২ সপ্তাহের ব্যবধানে দেয়ার পরামর্শ

গত ২৭ জানুয়ারি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে পরীক্ষামূলক টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভার্চুয়াল উপস্থিতিতে পাঁচজনকে টিকা দেয়া হয়।

করোনা পরিস্থিতি

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় মহামারি করোনাভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে। তবে কমেছে শনাক্তের হার।

মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনা সংক্রান্ত নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে আরও ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে আট হাজার ২৯৮ জনে দাঁড়িয়েছে।

এছাড়া, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৯৬ জনের শরীরে নতুন করে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। যার ফলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচ লাখ ৪১ হাজার ৪৩৪ জনে পৌঁছেছে।

আরও পড়ুন: টিকার দ্বিতীয় চালান আসছে ২২ ফেব্রুয়ারি: বেক্সিমকো এমডি পাপন

প্রতিদিন অন্তত ২ লাখ মানুষ টিকা গ্রহণ করছেন: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

এর আগেরদিন ২৪ ঘণ্টায় করোনায় ১১ জনের মৃত্যু এবং ৪৪৬ জনের শরীরে নতুন করে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে বলে সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়।

এদিকে, সারাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৫ হাজার ২৯টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে অ্যান্টিজেন টেস্টসহ গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪ হাজার ৭৮৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় মোট ৩৮ লাখ ৭৭ হাজার ৪২টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।

নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ২.৬৮ শতাংশ। মোট পরীক্ষায় এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় মোট মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৩ শতাংশ।

আরও পড়ুন: অনেক দেশই টিকা দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে: প্রধানমন্ত্রী

টিকা প্রদানে প্রবীণদের অন-স্পট রেজিস্ট্রেশনের বিষয়টি বিবেচনাধীন: স্বাস্থ্য সচিব

গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন আরও ৭৫১ জন। এ নিয়ে দেশে মোট সুস্থ ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে চার লাখ ৮৮ হাজার ৬২১ জনে। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯০ দশমিক ২৫ শতাংশ।

গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর ১৮ মার্চ প্রথম একজনের মৃত্যুর কথা জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।