সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং মিয়ানমারের সীমান্ত রক্ষী পুলিশের (বিজিপি) মধ্যে এক পতাকা বৈঠক অনুষ্টিত হয়েছে। রবিবার সকাল ১০ টায় টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ জেটি ঘাট সংলগ্ন বিজিবির রেস্ট হাউজে অনুষ্ঠিত হয় এই বৈঠক। টানা ৫ ঘন্টার পতাকা বৈঠকটি শেষ হয় বিকাল ৩ টায়।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সীমান্তে মিয়ানমারের গোলা বাংলাদেশ এসে পড়া এবং আকাশ সীমা লঙ্ঘনের ঘটনায় বৈঠকে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। এ ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে ভবিষ্যতে এ রূপ ঘটনা ঘটবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ।
বৈঠক শেষে বিকাল সাড়ে ৪ টায় টেকনাফে বিজিবি ২ ব্যাটালিয়নে অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার বলেন, বৈঠকের শুরুতে বিজিবি সীমান্তে গোলাগুলির বিষয়ে আলোচনা করেন। সম্প্রতি একাধিকবার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে গোলা এসে পড়া ও মিয়ানমারের হেলিকপ্টার আকাশ সীমা লঙ্ঘনের ঘটনা নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানালে বিজিপির পক্ষে এর জন্য দুঃখ প্রকাশ করা হয়।
আরও পড়ুন: আশিয়ান: বৈঠকের সিদ্ধান্ত মানতে বাধ্য না থাকার ঘোষণা মিয়ানমারের
তিনি বলেন, ভবিষ্যতে এ রূপ ঘটনা আর ঘটবে না বলে প্রতিশ্রুত দিয়েছে মিয়ানমার।
তিনি আরও জানান, একই সঙ্গে সীমান্তের পরিস্থিতি নিয়ে বিজিবি-বিজিপি এক সঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছে। বৈঠকে অনুপ্রবেশ রোধ, মাদক চোরাচালন বন্ধ করতে কাজ করার জন্য উভয় পক্ষে আলোচনা হয়েছে।
বিজিবি অধিনায়ক জানান, বৈঠকে বিজিপির পক্ষে বলা হয়েছে মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদি সন্ত্রাসী গোষ্ঠি বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে সীমান্তে নানা অপরাধ করছে। বিজিবির পক্ষ থেকে এ ঘটনার অস্বীকার করা হয়।
বিজিবির পক্ষে জানানো হয়, কখনও কোন সময় বাংলাদেশের ভূখণ্ড কোন প্রকার সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করতে দেয়া হয়নি। সন্ত্রাসীদের বাংলাদেশ কোন সহায়তা করেন না। ভবিষ্যতেও সন্ত্রাসীদের রোধে বাংলাদেশ কঠোর অবস্থানে থাকবে।
প্রেস ব্রিফিং এ উপস্থিত বিজিবি কক্সবাজার সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মোহাম্মদ আজিজুর রউফ জানিয়েছেন, পতাকা বৈঠকটি নিয়মিত বৈঠকের একটি অংশ। গত তিন মাস ধরে মিয়ানমার অভ্যন্তরে চলমান ঘটনাকে কেন্দ্র করে সীমান্তে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এ পরিস্থিতিতে বৈঠক করতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। তবে পরিস্থিতি নিয়ে শুরু থেকে দুই দেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর মধ্যে নানা পর্যায়ে যোগাযোগ ছিল। এ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিজিবির পক্ষ থেকে বিজিপির কাছে একাধিকবার চিঠি পাঠানো হয়। এর প্রেক্ষিতে বিজিপি বৈঠকে বসতে রাজী হয়। এই বৈঠকে আন্তরিক পরিবেশে অনুষ্টিত হয়েছে।
তিনি জানান, রবিবার সকাল ৯ টায় টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ জেটি ঘাটে মিয়ানমার সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিজিপির ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল টেকনাফ পৌঁছেন। এর পর শুরু হয় বৈঠক। সেখানে বিজিবির ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নিয়েছেন।
তিনি আরও জানান, বৈঠকে বিজিবির পক্ষে নেতৃত্ব দিয়েছেন টেকনাফ ২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার। বিজিপির পক্ষে নেতৃত্ব দিয়েছেন মিয়ানমারের ১১ বর্ডার গার্ড পুলিশের অধিনায়ক কর্নেল ইয়ে ওয়াই শো।
আরও পড়ুন: সীমান্তে মিয়ানমারের হেলিকপ্টার থেকে ব্যাপক গোলা বর্ষণ
মর্টার শেল নিক্ষেপের ঘটনায় আরাকান আর্মি ও আরসার ওপর দায় চাপাল মিয়ানমার