বাংলাদেশ ও মেক্সিকোর মধ্যে বাণিজ্য সম্প্রসারণ, বিনিয়োগ ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নে উভয় দেশ একসাথে কাজ করতে সম্মত হয়েছে।
মেক্সিকোর স্বাধীনতার ২০০ বছর উদযাপন উপলক্ষে সম্প্রতি দেশটিতে সফরকালে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম এবং মেক্সিকোর বৈদেশিক বাণিজ্য বিষয়ক উপমন্ত্রী লুজ মারিয়া ডি লা মোরা স্যানচেজের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ সম্মতি প্রকাশ করা হয়।
শুক্রবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মেক্সিকোর উপমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী দুদেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। মেক্সিকোর উপমন্ত্রী বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের অংশগ্রহণে মেক্সিকো সিটিতে বাণিজ্য বিষয়ক সেমিনার ও প্রদর্শনী আয়োজনের প্রস্তাব করেন এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এ বিষয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে নিয়মিত যোগাযোগ অব্যাহত থাকবে বলে তার সম্মতি প্রকাশ করেন।
এসময় মিয়ানামারের বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রত্যাবাসনের বিষয়ে বহুপাক্ষিক বিভিন্ন প্লাটফর্মে অব্যাহতভাবে সমর্থন প্রদানের জন্য মেক্সিকো সরকারের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।
পড়ুন: অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রায় ৮ লাখ টিকা আসছে শনিবার
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর উপস্থিতিতে স্বাক্ষরিত বাংলাদেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠন এফবিসিসিআই এবং মেক্সিকোর শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠন সিওএমসিই’র মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারকের বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন লুজ মারিয়া ডি লা মোরা স্যানচেজ।
তিনি উল্লেখ করেন, এ সমঝোতা স্মারক উভয় দেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।
শাহরিয়ার আলম বলেন, বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই দু’দেশের মধ্যে এক বিলিয়ন ডলারের বেশি বাণিজ্যের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে যা অত্যন্ত আশাব্যাঞ্জক। উভয় দেশের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের মধ্যে অনুষ্ঠিত এক সভায় বাংলাদেশ-মেক্সিকো চেম্বার অব কমার্স প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তী এবং বিজয় দিবস উদযাপনের সমাপনী অনুষ্ঠানে মেক্সিকোর সামরিক প্রতিনিধি দলের অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত আমাদের বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত করেছে। তিনি উভয় দেশের মধ্যে নিয়মিত ফরেন অফিস কনসালটেশন অনুষ্ঠানের ওপর জোর দেন।
মেক্সিকো সফরকালে সেদেশের ইবেরো-আমেরিকান ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী স্মারক বক্তব্য দেন যা ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ সরাসরি সম্প্রচার করে এবং ২ হাজার সাত শতাধিক শিক্ষার্থী এ অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন।
পড়ুন: জেনেভায় গ্লোবাল ফান্ড ম্যানেজমেন্ট টিমের সঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বৈঠক
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন: আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ চায় ঢাকা
এসময় তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ‘এসডিজি প্রগ্রেস অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্তির বিষয় উল্লেখ করে বলেন, দারিদ্র দূরীকরণ, ধরিত্রী সুরক্ষা এবং সকলের জন্য শান্তি ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের গৃহীত কার্যকর পদক্ষেপের স্বীকৃতি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এই অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়েছে।
শিক্ষা ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাথে সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য ইবেরো-আমেরিকান ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান শাহরিয়ার আলম। অনুষ্ঠান শেষে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে তার বক্ত্যব্যের জন্য ইউনিভার্সিটির পক্ষ থেকে ‘সার্টিফিকেট অভ রিকগনিশন’দেয়া হয়।
এসময় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর মেক্সিকোর শিক্ষার্থীদের বাংলাদেশ ভ্রমণ, বিশেষ করে বাংলাদেশের আকর্ষণীয় পর্যটন স্থান যেমন, বিশ্বের দীর্ঘতম প্রাকৃতিক সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার এবং বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সুন্দরবন ভ্রমণের আমন্ত্রণ জানান।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে একটি সামরিক কন্টিনজেন্ট এবং সাংস্কৃতিক দলসহ এই উদযাপনে অংশগ্রহণ করতে পেরে আমরা আনন্দিত। একইসাথে বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তী এবং বিজয় দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে মেক্সিকোর সামরিক প্রতিনিধি দলের অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত আমাদের বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত করেছে।