ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পুলিশ সুপার (এসপি) মোকতার হোসেন।
সোমবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর ভারপ্রাপ্ত বিচারক মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান সিদ্দিকীর আদালতে আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন মোকতার হোসেন। শুনানি শেষে আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আফরোজা ফারহানা আহমেদ অরেঞ্জ জানান, উভয় পক্ষ আদালতকে লিখিতভাবে জানায়, গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর তাঁরা (বাদী-বিবাদী) আপস করে বিয়ে করেছেন। ভুল বোঝাবুঝির কারণে এ মামলা। মামলার বাদী এজলাসে হাজির থেকে জামিনে আপত্তি নেই বলে জানালে বিচারক আসামির আবেদন মঞ্জুর করেন।
আরও পড়ুন: জাপা নেতা রুহুল আমিনকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
এদিন এ মামলায় চার্জশিট গ্রহণের তারিখ ধার্য ছিল। আদালত চার্জশিট আমলে নিয়ে আগামী ১১ এপ্রিল চার্জ গঠনের তারিখ ধার্য করেছেন।
মামলাটি তদন্ত করে গত ৩০ জানুয়ারি মোকতার হোসেনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সিরিয়াস ক্রাইম স্কোয়াডের পরিদর্শক জসিম উদ্দিন।
গত বছরের ১২ আগস্ট ঢাকার ৭ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলাটি করেন পুলিশের এক নারী পরিদর্শক। পরে ট্রাইব্যুনাল রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানার ওসিকে এজাহার হিসেবে গ্রহণ করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন: আদালত চত্বর থেকে পালানো হত্যা মামলার আসামি ফের গ্রেপ্তার
অভিযোগে বলা হয়, পুলিশ সুপার মোকতার হোসেন ২০১৯ সালের মে মাসে সুদানে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ পুলিশের কন্টিনজেন্টের কমান্ডার হিসেবে নিযুক্ত হন। বাদী আগে থেকেই সুদানে কর্মরত ছিলেন। সেখানে তাদের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০১৯ সালের ২০ ডিসেম্বর দুপুরে আসামি বাদীর বাসায় গিয়ে তার ব্যবহৃত গাড়ির চাবি চান। সে সময় তাকে ধর্ষণ করা হয়। এ ঘটনা কাউকে না জানাতে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখান ও হুমকি দেন মোকতার। ২২ ডিসেম্বর আবারও ধর্ষণ করেন। ২০২০ সালের ৩ জানুয়ারি ‘মৌখিকভাবে বিয়ে’ করে বাদীকে পুনরায় ধর্ষণ করেন। এরপর আরও কয়েক দফা বাদীকে ধর্ষণ করেন মোকতার হোসেন। কিন্তু নিকাহ রেজিস্ট্রেশন করার তাগিদ দিলে মোকতার হোসেন বাদীর সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন। বাদীকে এড়িয়ে চলতে থাকেন।
এর অবস্থায় গত ২১ এপ্রিল রাজধানীর রাজারবাগে মোকতার হোসেনের বাসায় গিয়ে আশ্বাস অনুযায়ী বিয়ের কাবিননামা করার তাগিদ দেন বাদী। এতে মোকতার হোসেন অস্বীকৃতি জানান। তখন মোকতার হোসেন, তার স্ত্রী ও পরিবারের অন্য সদস্যরা বাদীকে মারধর করেন। করোনার কারণে আদালত বন্ধ থাকায় মামলা করতে বিলম্ব হয়েছে বলেও জানিয়েছেন বাদী।
মোকতার হোসেন বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করেছেন বলে পুলিশের সংশ্লিষ্ট বিভাগে অভিযোগ জানিয়েছেন ওই নারী পরিদর্শক।