বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দুই হাত হারানো ঢাকার ধামরাইয়ের বর্ণমালা স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র মো. শেখ সাদিকে কেন ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
এক রিটের প্রাথমিক শুনানি করে সোমবার (১২ জুন) বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মো. শওকত আলী চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
এছাড়া সাত দিনের মধ্যে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডসহ সরকারের সংশ্লিষ্টদের এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: কারাগারে ‘চিকিৎসক নিয়োগ বিধিমালা’ চূড়ান্তে ১ মাস সময় দিলেন হাইকোর্ট
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।
আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, মো. শেখ সাদি ধামরাই বর্ণমালা স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ছিল। গত বছরের ১৫ জুলাই দুপুর ১২টার সময় মো. শেখ সাদি ধানসিঁড়ি আবাসিক এলাকায় অবস্থিত একটি পুকুরে গোসল করতে যায়। সে গোসল করার জন্য পুকুরে ঝাঁপ দেয়, এসময় পানির ওপর ঝুলন্ত বিদ্যুতের তারে স্পৃষ্ট হয়ে তার উভয় হাতে আগুন ধরে যায়। তার চিৎকারে আশপাশে থাকা লোকজন তাকে উদ্ধার করে ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানকার চিকিৎসক তাকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটে পাঠান।
তিনি বলেন, শারীরিক অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তার জীবন বাঁচাতে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটের চিকিৎসক শেখ সাদির উভয় হাত কাঁধ থেকে কেটে ফেলে দেয়। দুর্ঘটনাস্থলে ও তার আশপাশে বিভিন্ন সময় পল্লী বিদ্যুতের তার ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল। স্থানীয় লোকজন অনেকবার বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ধামরাই জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজারকে ওই এলাকার ঝুঁকিপূর্ণ তার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি।
আরও পড়ুন: অর্পিত সম্পত্তির তদারকি-লিজের ক্ষমতা ডিসিদের: হাইকোর্ট
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ধামরাইয়ের অবহেলায় শেখ সাদি তার উভয় হাত হারিয়েছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড কোনোভাবেই ঘটনায় দায়দায়িত্ব অস্বীকার করতে পারে না।
মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, গত ২ মার্চ শেখ সাদির বাবা বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের কাছে ক্ষতিপূরণ চেয়ে একটি আবেদন করে। কিন্তু কোনো জবাব না পেয়ে গত ২ মে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড বরাবর ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান।
নোটিশের জবাব না পেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়।
রিটে শেখ সাদির চিকিৎসা খরচ বাবদ বিশ লাখ টাকা, দুর্ঘটনার কারণে যন্ত্রণা ও দুভোর্গের জন্য দশ লাখ টাকা, কর্মক্ষমতা হারানো বাবদ এক কোটি বিশ লাখ টাকা বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের কাছে ক্ষতিপূরণ হিসেবে দাবি করা হয়েছে। এছাড়া ভবিষ্যতে শেখ সাদির চিকিৎসার সকল খরচ বহন এবং ভবিষ্যতে অঙ্গ প্রতিস্থাপনের ব্যবস্থা করতে হবে। পড়াশুনার জন্য বিশেষায়িত সুবিধা এবং ভবিষ্যতে শেখ সাদিকে পুনবার্সনের ব্যবস্থা করারও দাবি করা হয়েছে এই রিটে।
আরও পড়ুন: তাফসির আউয়ালকে বিদেশ যেতে বাধা না দিতে হাইকোর্টের নির্দেশ