র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ সত্য নয় বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মইন।
শনিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে তাদের সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘র্যাব মানবাধিকার লুণ্ঠন করে না, মানবাধিকার রক্ষা করে।’
কমান্ডার মঈন বলেন, র্যাবের ৯ হাজার সদস্যের মধ্যে অন্তত ২৮ জন বিভিন্ন অপারেশনে নিহত এবং দুই হাজার সদস্য আহত হয়েছেন। এর মধ্যে অন্তত এক হাজার সদস্য চিরস্থায়ীভাবে পঙ্গু হয়ে গেছেন।
তিনি বলেন, র্যাবের ধারাবাহিক তৎপরতার কারণে বাংলাদেশ জঙ্গি ও সুন্দরবনের জলদস্যুদের কবল থেকে রক্ষা পেয়েছে।
আরও পড়ুন: আইজিপিসহ র্যাবের ৭ কর্মকর্তার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা
তিনি আরও বলেন, র্যাব বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের সদস্য ও বনদস্যুদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে ও তাদের পুনর্বাসনে সহায়তা করে মানবাধিকার রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে।
কমান্ডার মঈন বলেন, ‘এই নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে আমরা এখনও কোনো চিঠি পাইনি। এ বিষয়ে অফিসিয়াল চিঠি পাওয়ার পর আমরা পদক্ষেপ নেব।’
তিনি বলেন, কারও পক্ষেই আইনের ঊর্ধ্বে ওঠার সুযোগ নেই। র্যাব যেহেতু অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনী তুলনায় অনেক বেশি কঠোর, তাই র্যাবের কোনো কর্মকর্তা আইন লঙ্ঘন করলে তার আরও কঠোর সাজা হয়।
উল্লেখ্য, মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ ও ছয় কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বেনজীর আহমেদ বাংলাদেশ পুলিশের বর্তমান মহাপরিদর্শক (আইজিপি)।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘনের জন্য গ্লোবাল ম্যাগনিটস্কি নিষেধাজ্ঞা কর্মসূচির অধীনে দেশটির ট্রেজারি বিভাগ র্যাব, বেনজির আহমেদ ও অন্য ছয় কর্মকর্তাকে এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় এনেছে।
আরও পড়ুন: সম্পর্কে প্রভাব পড়বে কিনা যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভর করবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজির আহমেদ ছাড়াও নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা অন্যরা হলেন-র্যাব ইউনিট-৭ এর সাবেক কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মিফতাহ উদ্দিন আহমেদ, র্যাবের বর্তমান মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) খান মোহাম্মদ আজাদ, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) তোফায়েল মোস্তাফা সরোয়ার, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম ও সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) মোহাম্মদ আনোয়ার লতিফ খান।
২০১৮ সালের কক্সবাজারের টেকনাফে পৌর কাউন্সিলর একরামুল হকের ‘বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড’ এর ঘটনাটি উল্লেখ করেছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর।
এ কর্মকর্তাদের ওপর মার্কিন নির্বাহী আদেশ (ইও) ১৩৮১৮ জারি করা হয়েছে। এর মানে হলো দেশটিতে এ কর্মকর্তাদের কোনো সম্পত্তি থাকলে তা জব্দ করা হবে। এ প্রথম বাংলাদেশের কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: আইজিপিসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ প্রত্যাখান ঢাকার