সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে পিলপিল নামের কুমিরের ডিম থেকে ৩৮টি ছানা ফুটেছে। সোমবার দুপুরে প্রজনন কেন্দ্রের ডিজিটাল ইনকিউবেটর থেকে একে একে কুমিরের ছানা ফুটে বের হয়।
জানা যায়, ছানা ফুটাতে কুমিরের ৩৮টি ডিম ৮২ দিন ইনকিউবেটরে রেখে নিবিড় পরিচর্যা করে বন বিভাগ। প্রজনন কেন্দ্রের প্যানে রেখে কুমিরের বাচ্চাগুলোকে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছে বন বিভাগ। এবার বন বিভাগ কুমিরের ডিম থেকে শতভাগ বাচ্চা ফুটাতে সফল হয়েছে।
জানা গেছে, ২০১৭ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত তিন বছরে জুলিয়েট এবং পিপল নামে এই দুটি কুমিরে প্রজনন কেন্দ্রে ১৬৪টি ডিম পাড়ে। কিন্তু বন বিভাগ ওই ১৬৪টি ডিম থেকে কুমিরের একটি ছানাও ফোটাতে পারেনি। এরপর ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে কুমিরের চারটি ডিম থেকে বাচ্চা ফোটে। ২০২১ সালে প্রজনন কেন্দ্রে একটি ডিমও পাড়েনি কুমিরে।
আরও পড়ুন:বাগেরহাটে জেলের বাড়ি থেকে কুমির উদ্ধার
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির জানান, প্রজনন কেন্দ্রের কুমির পিলপিল ২২ জুন ৩৮টি ডিম পাড়ে। ওই ডিমগুলো ডিজিটাল ইনকিউবেটরে রাখা হয়। ৮২ দিন পর ৩৮টি ডিমের সবগুলো থেকেই বাচ্চা ফুটেছে। প্রজনন কেন্দ্রের প্যানে কুমিরের ছানাগুলো লালন পালন করে বড় করে তোলা হবে।
তিনি আরও জানান, ৬ থেকে ৭ বছর প্যানে থাকবে কুমির। পরবর্তীতে সুন্দরবনের নদী-খালে এই কুমিরগুলো অবমুক্ত করা হবে।
এপর্যন্ত করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে জন্ম নেয়া ২০৬টি কুমির সুন্দরবনের নদী-খালে অবমুক্ত করা হয় বলে তিনি জানান। বন বিভাগের তথ্য মতে, বিলুপ্তপ্রায় লবণপানি প্রজাতির কুমিরের প্রজনন বৃদ্ধি ও লালন-পালনের জন্য সরকার ২০০০ সালে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের করমজল পর্যটনকেন্দ্রে ওই ‘কুমির প্রজনন’ কেন্দ্র গড়ে তোলে। সুন্দরবনের নদী-খালে পাওয়া লবণ পানির পাঁচটি কুমির নিয়ে কেন্দ্রের প্রজনন কার্যক্রম শুরু হয়। ২০০৫ সাল থেকে রোমিও-জুলিয়েট নামের ওই কুমির জুটি দিয়ে প্রজনন শুরু হয়। এর পর ওই প্রজনন কেন্দ্রে যুক্ত হয় পিলপিল এবং আলেকজেন্ডার। বর্তমানে রোমিও এবং জুলিয়েট প্রজনন ক্ষমতা হারিয়েছে বলে বন বিভাগ জানায়।