ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের ফেনী অংশে শশর্দী থেকে মুহুরীগঞ্জ পর্যন্ত দৈর্ঘ্য ২৩ কিলোমিটারের মধ্যে অনুমোদনহীন অরক্ষিত ১২টি ও ২১টি অনুমোদিত রেলক্রসিং রয়েছে। চলতি বছরের ৭ মাসে রেলপথের ফেনী অংশে ট্রেনে কাটা পড়ে ৯ ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।
ট্রেনকে ভ্রমণের অন্যতম নিরাপদ মাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করা সত্ত্বেও প্রতি বছর বাংলাদেশে রেল দুর্ঘটনায় বহু মানুষ মারা যায়। জানুয়ারি ২০২২ সালে প্রকাশিত রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুসারে, ২০২১ সালে ১২৩টি রেল দুর্ঘটনায় প্রায় ১৪৭ জন প্রাণ হারিয়েছেন।
গত ২৯ জুলাই মিরসরাইয়ের খৈয়াছড়া রেলক্রসিংয়ে দুর্ঘটনায় একসঙ্গে ১১ তরুণের মৃত্যু হয়। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও দুজনের মৃত্যু হয়। এর মধ্য দিয়ে নিরাপদ রেলক্রসিংয়ের বিষয়টি ফের সামনে উঠে আসে।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের ঊর্ধ্বতন উপ সহকারী প্রকৌশলী (পথ) রিটন চাকমা জানান, প্রতিনিয়ত ইচ্ছেমতো রেলের ওপর দিয়ে পথ তৈরি করা হচ্ছে। অনুমোদনহীন এসব ক্রসিংগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রয়েছে মুহুরীগঞ্জে। এখানে ৬টি অনুমোদনহীন রেলক্রসিং তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া শর্শদী, দেওয়ানগঞ্জ, ফাজিলপুরে রয়েছে আরও ৬টি। সবচেয়ে ঝূকিপূর্ণ হচ্ছে মুহুরীগঞ্জ।
ফেনীর বারাহীপুর রেলক্রসিং এলাকার দায়িত্বে থাকা গেটম্যান জীবন জানান, ট্রেন আসার আগেই গেট বন্ধ করা হয়। কিন্তু গাড়ীর ড্রাইভার ও পথচারীরা দ্রুতত রেল লাইন পার হওয়ার চেষ্টা করে। এতে অনেক সময় দুর্ঘটনার শিকার হয়।
অনুমোদনহীন এসব রেলক্রসিং প্রসঙ্গে ফেনী রেলস্টেশন মাস্টার সাইফুল ইসলাম বলেন, রেলপথের পাশে বসতঘর থাকায় বিভিন্ন সময় অনুমোদনহীন ক্রসিং তৈরি করা হয়। ফলে দুর্ঘটনার শঙ্কা অনেক বেশি বাড়ছে।
রেলওয়ে পুলিশের ফেনী ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) নফিল উদ্দিন জানান, চলতি বছরের ৭ মাসে রেলপথের ফেনী অংশে ট্রেনে কাটা পড়ে ৯ ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে দুর্ঘটনায় ৯টি অপমৃত্যুর মামলাসহ ১২ মামলা রেকর্ড হয়েছে।
তিনি আরও জানান, গত বছরের ১১ অক্টোবর ভোরের দিকে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফতেহপুর রেলক্রসিংয়ে যাত্রীবাহি বাস রেললাইনে উঠে পড়লে ট্রেনের সাথে সংঘর্ষ ঘটে। এতে ৪ ব্যক্তি প্রাণ হারান। এছাড়া বারাহীপুর রেলক্রসিং, শহরের রেলগেট ক্রসিংয়ে সাম্প্রতিককালে দুর্ঘটনা ঘটে এবং প্রাণহানিও হয়।
পড়ুন: মিরসরাই ট্রাজেডি: আয়াতের পর এবার চলে গেলেন তাসমির হাসান