জানা যায়, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালে গত ১৬ দিনে প্রায় ৭৫০ জন করোনা আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে এই সময়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের। তবে করোনার ‘উপসর্গ’ নিয়ে মৃত্যু হয়েছে ৩৭ জনের।
এছাড়া গত ৪৮ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত ও এর লক্ষণ নিয়ে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। কুমিল্লায় এরই মধ্যে প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন দুই হাজারেরও বেশি মানুষ।
আরও পড়ুন: করোনা: কেরানীগঞ্জের ৭টি ইউপিকে রেডজোন ঘোষণা, সেনা টহল জোরদার
কুমিল্লা জেলা সিভিল সার্জন অফিসের সূত্রমতে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কুমিল্লায় করোনা আক্রান্ত হয়ে ৬৬ জন মারা গেছেন। আক্রান্ত হয়েছেন দুই হাজার ৩৭৮ জন। তার মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৬৯৭ জন।
সর্বশেষ বৃহস্পতিবার জেলার লাকসাম, চান্দিনায় ও নাঙ্গলকোটে একজন করে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে করোনা রোগীদের সেবায় গত ৩ জুন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৫৫ শয্যার আইসোলেশন ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। স্থাপন করা হয়েছে ১০ বেডের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ)।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. সাজেদা খাতুন জানান, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে গত ৩ জুন থেকে বুধবার পর্যন্ত প্রায় ৭০০ করোনা রোগী ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ১১ জন। এছাড়া লক্ষণ ও উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হওয়াদের মধ্যে মারা গেছেন ৩৭ জন।
সর্বশেষ গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন আরও ৫০ জন করোনা আক্রান্ত রোগী। গুরুতর অবস্থায় করোনার লক্ষণ ও উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হয়েছেন ৬০ জন। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউ সাপোর্টে আছেন ১০ জন।
আরও পড়ুন: করোনায় বিশ্বব্যাপী মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৫৩,২৬৮
ডা. সাজেদা খাতুন আরও জানান, আইসিইউ’র সাপোর্ট প্রয়োজন এমন গুরুতর রোগী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। রোগীর তুলনায় আইসিইউ বেডের সংখ্যা কম। সেই সাথে জনবল সংকটও রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত সোমবার তাৎক্ষণিক আইসিইউ সুবিধা না পাওয়ায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার পর রোগীর স্বজনেরা হাসপাতালের দরজা-জানালা ভাঙচুর ও অক্সিজেনের লাইন ছিঁড়ে ফেলেন। পরে হাসপাতালের অন্য রোগীর স্বজনরা তিনজনকে পুলিশে সোপর্দ করে।
করোনার লক্ষণ ও উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের বিষয়ে কুমিল্লার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মো.শাহাদাত হোসেন জানান, ‘করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করা ব্যক্তিদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে না। কারণ সাধারণ রোগে বা স্বাভাবিক অবস্থায় মারা যাওয়া ব্যক্তিদেরও করোনার লক্ষণ থাকে। উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুর পর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে এমন তথ্য সংশ্লিষ্ট উপজেলায় পাওয়া যেতে পারে।’