পদ্মা সেতু চালুর পর মোংলা বন্দরের গতি বাড়াতে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে খুলনা-মোংলা রেললাইনের কাজ। ইতোমধ্যে রেললাইনের ৯৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। আগামী ডিসেম্বরে উদ্বোধন হওয়ার কথাও রয়েছে।
রেললাইন চালু হলে মোংলা বন্দর যেমন আরও গতিশীল হবে, তেমনি এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক কার্যক্রম আরও বৃদ্ধি পাবে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছেন, বন্দরের পণ্য আনা নেয়ার ক্ষেত্রে সড়কপথের পাশাপাশি রেল সংযোগ জরুরি। কিন্তু মোংলা বন্দরের সঙ্গে রেল সংযোগ না থাকায় যাতায়াত সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছিলেন ব্যবসায়ীরা। এ অবস্থায় মোংলা বন্দরকে আরও গতিশীল করতে তিন হাজার ৮০১ কোটি টাকা ব্যয়ে রেল সংযোগ স্থাপনের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ২০১৬ সালের নভেম্বরে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। ২০২০ সালের মে মাসে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনও শেষ হয়নি। চলতি বছরের ডিসেম্বরে কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। তবে এর মধ্যে প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে চার হাজার ২৬০ কোটি টাকা দাঁড়িয়েছে।
আরও পড়ুন:দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে ঢাকা-ভাঙা রেলপথের কাজ
মোংলা বন্দর রেলপথ প্রকল্পের প্রধান প্রকৌশলী ও উপপ্রকল্প পরিচালক আহম্মেদ হোসেন মামুন বলেন, অপ্রত্যাশিত পরিবেশের কারণে প্রকল্পের ব্যয় বেড়েছে। এছাড়া প্রকল্পে কিছু পরিবর্তন আনার কারণেও ব্যয় বেড়েছে। ৬৫ কিলোমিটার রেললাইন ছোটবড় ৩২টি ব্রিজ ও ১০৬টি কালভার্টসহ আটটি স্টেশন নির্মাণ করা হচ্ছে। চলতি বছরের ডিসেম্বরে কাজ শেষ হয়ে গেলে উদ্বোধন হবে।
মোংলা বন্দর ব্যবহারকারী সমন্বয় কমিটির মহাসচিব অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম বলেন, এই রেললাইন চালু হতে যত বিলম্ব হচ্ছে ততই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বন্দরের ব্যবসায়ীরা। পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে আরও প্রচুর জায়গা তৈরির দরকার ছিল। নৌপথের পাশাপাশি রেলপথটিকে প্রধান পথ হিসেবে আমরা বেছে নিয়েছি। এটি চালু হলে ব্যবসা ও যাতায়াতে দারুণ পরিবর্তন আসবে। অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন হবে।’
মোংলা বন্দর বার্থ এন্ড শিপ অপারেটর এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত বলেন, খুলনা-মোংলা রেলপথ চালু হয়ে গেলে বাংলাদেশ থেকে ভুটান ও নেপালে সহজে পণ্য যেতে পারবে। এক্ষেত্রে বন্দর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের কাজে গতি আসবে। অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটবে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এ্যাডমিরাল মোহাম্মদ মুসা বলেন, রেললাইন চালু হলে বন্দরের কাজে গতি আসবে। সেইসঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলসহ দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হবে। এই অঞ্চলের অর্থনীতি, কর্মসংস্থান আয়-বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে এই রেলপথ।
আরও পড়ুন: ২০৩০ সালের মধ্যে কারিগরি শিক্ষা ৩০ শতাংশে উন্নীত করতে চায় সরকার