নিরাপত্তা পরিষদের উচ্চ-পর্যায়ের ভার্চুয়াল বৈঠকে বাইডেনের এ উদ্যোগের ঘোষণা দেন জাতিসংঘে ভারপ্রাপ্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত রিচার্ড মিলস।
তিনি বলেন, মার্কিন প্রশাসন বিশ্বাস করে যে এ উদ্যোগগুলোই হলো গণতান্ত্রিক ও ইহুদি রাষ্ট্র হিসেবে ইসরায়েলের ভবিষ্যত নিশ্চিত করার পাশাপাশি ফিলিস্তিনিদের নিজেদের রাষ্ট্র পাওয়ার এবং সম্মান ও নিরাপত্তার সাথে বসবাস করার বৈধ আকাঙ্ক্ষাকে সমর্থন দেয়ার সবচেয়ে ভালো উপায়।
আরও পড়ুন: সোনার বাংলার বাস্তবায়ন ফিলিস্তিনিদের জন্য প্রেরণাদায়ক: পররাষ্ট্রমন্ত্রী মালিকি
বাইডেনের আগে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ইসরায়েলকে নজিরহীন সমর্থন জানায়, জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়, তেল আবিব থেকে সেখানে মার্কিন দূতাবাস সরিয়ে নেয়, ফিলিস্তিনিদের জন্য আর্থিক সাহায্যে কোপ দেয় এবং ফিলিস্তিনিদের দাবি করা ভূমিতে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনের অবৈধতা বিষয়ে উল্টো সুর ধরে।
ইসলায়েল ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে পূর্ব জেরুজালেম ও পশ্চিম তীর দখল করে নেয়। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উভয় এলাকাকে দখলকৃত অঞ্চল বলে মনে করে এবং ফিলিস্তিনিরা এগুলোকে তাদের ভবিষ্যত স্বাধীন রাষ্ট্রের অংশ হিসেবে চায়। ইসরায়েল ১৯৬৭ সালে দখল করার পর থেকে পশ্চিত তীর ও জেরুজালেমে বসতি স্থাপনের সুদূরপ্রসারী নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে যেখানে প্রায় সাত লাখ ইহুদি বসতি স্থাপনকারীর বাস।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনের দীর্ঘদিনের কণ্ঠস্বর সায়েব এরাকাত আর নেই
ইসরায়েল-ফিলিস্তিন দ্বন্দ্বের বিষয়ে বাইডেন প্রশাসনের অধিকতর নিরপেক্ষ উদ্যোগগুলো স্পষ্টভাবে তুলে ধরেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত রিচার্ড মিলস।
তিনি বলেন, ‘নতুন প্রশাসনের অধীনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নীতি হবে পারস্পরিক সম্মতির দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানকে সমর্থন করা, যেখানে ইসরায়েল শান্তি ও নিরাপত্তা সাথে একটি টেকসই ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের পাশাপাশি বসবাস করবে।’
কোনো পক্ষেই শান্তি চাপিয়ে দেয়া যায় না উল্লেখ করে রিচার্ড মিলস বলেন, অগ্রগতি এবং চূড়ান্ত সমাধানের জন্য ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনিদের অংশগ্রহণ ও চুক্তি প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনে ইসরাইলের অবৈধ দখলদারিত্বের নিন্দায় বাংলাদেশ
‘এসব উদ্দেশ্য এগিয়ে নিতে বাইডেন প্রশাসন ফিলিস্তিনের পাশাপাশি ইসরায়েলের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বাসযোগ্য কার্যকলাপ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করবে। যার মধ্যে থাকবে ফিলিস্তিনি নেতৃত্ব ও জনগণের সাথে মার্কিন সম্পর্ক নবায়ন করা,’ বলেন তিনি।
মিলস আরও বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট বাইডেন স্পষ্ট যে তার উদ্দেশ্য হলো ফিলিস্তিনি জনগণের অর্থনৈতিক উন্নয়ন কর্মসূচি ও মানবিক সাহায্যে মার্কিন সহায়তা কর্মসূচি পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা এবং গত মার্কিন প্রশাসনের বন্ধ করে দেয়া কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরায় চালু করতে পদক্ষেপ নেয়া।’
আরও পড়ুন: বাইডেন-পুতিনের প্রথম ফোনালাপ: কী কথা হলো তাদের মধ্যে?
ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠান সময় ১৯৪৮ সালের যুদ্ধে ঘর হারানো সাত লাখ ফিলিস্তিনিকে সাহায্য করতে প্রতিষ্ঠিত জাতিসংঘের রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্ক এজেন্সির (ইউএনআরডব্লিউএ) জন্য তহবিল সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছিলেন ট্রাম্প। এ সংস্থাটি পশ্চিম তীর ও গাজা উপত্যকার পাশাপাশি জর্ডান, সিরিয়া ও লেবাননে ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তু ও তাদের বংশধর মিলিয়ে ৫৫ লাখ মানুষকে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাদ্য ও অন্যান্য সহায়তা দিয়ে থাকে। যুক্তরাষ্ট্র ছিল ইউএনআরডব্লিউএ’র প্রধান দাতা এবং সেখান থেকে তহবিল হরিয়ে সংস্থাটি আর্থিক সংকটে পড়ে যায়।
আরও পড়ুন: দায়িত্ব পেয়েই বাইডেন প্রথমেই যে চ্যালেঞ্জগুলোর মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন
সেই সাথে ট্রাম্প প্রশাসন ২০১৮ সালের সেপ্টম্বরে ওয়াশিংটনে প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের কার্যালয় বন্ধ করে দেয়। তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ হয়ে যায় যুক্তরাষ্ট্রে ফিলিস্তিনের কূটনৈতিক মিশন।