নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পথ সুগম করতে আওয়ামী লীগ সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির লক্ষ্যে রবিবার সকাল থেকে শুরু হচ্ছে বিএনপি ও সমমনা বিরোধী দলগুলোর দেশব্যাপী ৪৮ ঘণ্টার সড়ক, রেল ও নৌপথ অবরোধ।
রবিবার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত সারাদেশে এ অবরোধ চলবে।
বর্তমান সরকারের পদত্যাগ এবং একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধানের জন্য নির্দলীয় নিরপেক্ষ প্রশাসন প্রতিষ্ঠার দাবিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীও ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ পালন করবে।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ কর্মসূচি সফল করতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে পালনের জন্য নেতা-কর্মী ও সমর্থক এবং দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: বিজয় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে: রিজভী
তিনি বলে, সংবাদপত্র বা গণমাধ্যমের যানবাহন, অ্যাম্বুলেন্স এবং অক্সিজেন সিলিন্ডার ও ওষুধ বহনকারী যানবাহন ঘোষিত অবরোধের আওতাবহির্ভূত থাকবে।
বিএনপি-জামায়াত ছাড়াও ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, গণতন্ত্র মঞ্চ, এলডিপি, গণফোরাম ও পিপলস পার্টি, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, গণঅধিকার পরিষদ লেবার পার্টি ও এনডিএম পৃথকভাবে অবরোধ কর্মসূচি পালন করবে।
এদিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে আগামীকাল রবিবার চট্টগ্রামে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হরতাল পালন করবে বিএনপি।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির দপ্তর সমন্বয়কারী ইদ্রিস আলী জানান, সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরুকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি দিনব্যাপী হরতালের ডাক দিয়েছে।
অ্যাম্বুলেন্স, সংবাদপত্র বহনকারী যানবাহন, সাংবাদিক ও ফায়ার সার্ভিস সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া হরতালের আওতাবহির্ভূত থাকবে।
এর আগে গত ২৯ অক্টোবর এক দফা দাবিতে এবং ২৮ অক্টোবরের সমাবেশে পুলিশের হামলার প্রতিবাদে ২৯ অক্টোবর দিনব্যাপী হরতাল এবং ৩১ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত তিন দিনের অবরোধ পালন করে বিরোধী দলগুলো।
আরও পড়ুন: আমীর খসরুকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে চট্টগ্রামে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক বিএনপির
হরতাল চলাকালে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ ও গ্রেপ্তারের ঘটনায় অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন।
দেশব্যাপী তিন দিনের অবরোধে সংঘর্ষ এবং যানবাহনে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ব্যাপক ঘটনায় চারজন নিহত হয়েছে।
এদিকে গত ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় এক পুলিশ কনস্টেবলসহ দুইজন নিহত হওয়ার ঘটনায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ওই দিন নয়াপল্টনে বিএনপির বহুল আলোচিত মহাসমাবেশ শুরুর দেড় ঘণ্টা পর কাকরাইলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন দলটির নেতা-কর্মীরা। ক্রমেই তা নয়াপল্টনের মহাসমাবেশে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে, যার ফলে সমাবেশটি মাঝপথে ভণ্ডুল হয়ে যায়।
ওই রাজনৈতিক সহিংসতার পরিপ্রেক্ষিতে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। সেদিন থেকেই অবরুদ্ধ হয়ে আছে দলটির প্রধান কার্যালয়।
আরও পড়ুন: খুলনায় বিএনপির ২০০০ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা, আটক ১৫০