বিএনপির সিনিয়র নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘দেশের প্রতিবন্ধকতার ৫১ বছর পরও আমরা মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রকৃত চেতনা বাস্তবায়ন করতে পারিনি।
বুধবার এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি নেতা এসব কথা বলেন। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবে এ কর্মসূচির আয়োজন করে বিএনপি।
আরও পড়ুন: সরকার স্বেচ্ছায় পদত্যাগ না করলে জনগণ বাধ্য করবে: খন্দকার মোশাররফ
তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা ছিল গণতন্ত্র, ন্যায় ও সাম্য প্রতিষ্ঠা। শহীদ বুদ্ধিজীবীরা তাদের জীবন উৎসর্গ করে আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্বপ্ন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করতে হবে। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হলে এই সরকারকে অপসারণ করতে হবে। আমরা সমগ্র দেশের জনগণ সঙ্গে নিয়ে এই শাসককে উৎখাত করতে প্রস্তুত।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মোশাররফ বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়াই বলপ্রয়োগ করে ১৪ বছর ধরে ক্ষমতায় রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘তারা ২০১৪ সালে ভোট ছাড়াই সংসদ গঠন করেছিল এবং ২০১৮ সালে তারা রাতে ভোট দেয়। তারা এখন আবারও দেশে একটি একতরফা নির্বাচন করার চেষ্টা করছে।’
বিএনপি নেতা বলেন, তাদের দল গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং জনগণের ভোট ও অন্যান্য অধিকারের জন্য ১০ দফা দাবি প্রণয়ন করেছে।
তিনি বলেন, বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে তাদের দল ক্ষমতায় এলে কীভাবে দেশ মেরামত করবে তার একটি রূপরেখাও তারা উপস্থাপন করবেন। ‘আসুন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য সেই রূপরেখা এবং ১০ দফা নিয়ে এগিয়ে যাই। দেশকে দুঃশাসন থেকে মুক্ত করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার এই দিনে আমরা শপথ নিই।’
মোশাররফ বলেন, লাখ লাখ মানুষ সারাদেশে তাদের দলের ১০টি বিভাগীয় সমাবেশে যোগ দিয়ে বার্তা দেয় যে যারা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে, অর্থনীতি ও বিচার বিভাগকে ধ্বংস করেছে এবং সমাজকে কলুষিত করেছে তারা রাষ্ট্রকে মেরামত করতে পারবে না।
তিনি আরও বলেন, ‘মানুষ এখন ক্ষমতার পরিবর্তন চায়। এই সরকারের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করা এবং জনগণ যে পরিবর্তন চায় তা আনার দায়িত্ব এখন বিএনপি, সব জাতীয়তাবাদী ও গণতান্ত্রিক শক্তির।’
এর আগে সকালে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান খন্দকার মোশাররফসহ দলের সিনিয়র নেতারা।
পরে দলের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠন শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে।
১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর রাতে ঢাকায় শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, লেখক, চিকিৎসক, বিজ্ঞানী, আইনজীবী, শিল্পী, দার্শনিক ও রাজনৈতিক চিন্তাবিদসহ দুই শতাধিক বুদ্ধিজীবীকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাদের স্থানীয় সহযোগীদের সহায়তায় তুলে নিয়ে যায়।
এ উপলক্ষে সকালে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিএনপি জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখে এবং কালো পতাকা উত্তোলন করে।
আরও পড়ুন: বিএনপি কার্যালয়ে পুলিশ লুটপাট, ভাংচুর করেছে: খন্দকার মোশাররফ
বিএনপির সমাবেশে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের আহ্বান খন্দকার মোশাররফের