বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ও নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে চার দফা স্মারকলিপি পেশ করেছে ক্ষমতাসীন দলের সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ।
বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) বিকালে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি হস্তান্তর করেন যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক মো. মইনুল হোসেন খান।
এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি ছাড়াও বাকি দফাগুলো হলো- বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার, দণ্ডপ্রাপ্ত তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জুবাইদা রহমানকে দেশে ফেরত এনে বিচারের রায় কার্যকর এবং বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের আত্মস্বীকৃত পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের রায় কার্যকর করা।
যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, ‘এটা জনগণের কাছে পরিষ্কার যে জিয়াউর রহমানই ১৯৭৫ সালের হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী। কারণ তারাই এ হত্যাকাণ্ডের সুবিধাভোগী। তারাই বন্দুকের নল উঁচু করে দল গঠন করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ১৯৭৫ সালের পর বাংলাদেশের জনগণের উপর এই সংগঠন যে নৃশংসতা চালিয়েছে; একাত্তরের আদলে যেভাবে সন্ত্রাস, নির্যাতন, হত্যা ও সহিংসতা করেছে; তাতে আমরা নৈতিকভাবে মনে করি এদেশে বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই।’
শেখ ফজলে শামস পরশ বলেন, ‘দ্বিতীয়ত, আমরা জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার চাই। এটি আজকের যুব সমাজ ও প্রগতিশীল, অসাম্প্রদায়িক, উন্নত বাংলাদেশ নির্মাণের ক্ষেত্রে যারা সংগ্রাম করে যাচ্ছে, সেই নাগরিকদের প্রত্যাশা। এটি না হলে প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশ কলঙ্কমুক্ত হবে না। তাই জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার এখন সময়ের দাবি এবং একটি ন্যায্য দাবি বলে আমরা মনে করি। আমরা আজ এ দাবি উপস্থাপন করার জন্য এখানে এসেছি।’
আরও পড়ুন: ঢাকার প্রবেশমুখে যুবলীগের শান্তি সমাবেশ শনিবার
শেখ হাসিনার উপর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় তারেক রহমানকে ফিরিয়ে আনা এবং আদালতের রায় বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, ‘তিনি বিদেশ থেকেও জঘন্য কর্মকাণ্ড এবং সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত। গতকাল আমাদের যুবলীগের একজন নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। তারা ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে আমাদের হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে হত্যা করেছে। প্রায় ২৫ হাজার নেতা-কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা দাবি করছি, বিএনপি-জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করতে হবে।’
স্মারকলিপি পাওয়ার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘আমরা তাদের স্মারকলিপি পেয়েছি। আইন অনুযায়ী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যা যা ব্যবস্থা নেওয়া দরকার আমরা নেব। আমরা সব ঘটনা অবগত আছি। ইতোমধ্যেই তারেক রহমান ও তার স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আদালতের মাধ্যমে দোষী সাব্যস্ত হয়েছে। তাদের ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা সবকিছু করব।’
বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার দিকে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মইনুল হোসেনের নেতৃত্বে আরেকটি প্রতিনিধি দল ইসি সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলমের কাছে স্মারকলিপি জমা দেয়।
অন্যদিকে, যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক মইনুল হোসেন স্বাক্ষরিত স্মারকলিপির অনুলিপি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও পাঠানো হয়েছে।