সাভার থেকে প্রাইভেটকার নিয়ে চট্টগ্রামে এসে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজি করার সময় দুই নারীসহ চার ভুয়া সাংবাদিককে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, কাঁধে ক্যামেরা ঝুলিয়ে, হাতে দামি মোবাইল ফোন নিয়ে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদাবাজি করার সময় জেলার ফটিকছড়ির শান্তিরহাট এলাকা থেকে সোমবার রাত ৮টার দিকে তাদের আটক করে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয় ব্যবসায়িরা। এ সময় চাদাঁবাজিতে ব্যবহৃত একটি প্রাইভেট কারটি জব্দ করা হয়।
আটক চার ভুয়া সাংবাদিকরা হলেন ময়মনসিংহ গফরগাঁও থানা ধোপঘাট এলাকার মৃত ওয়াজ উদ্দিন সরকারের ছেলে জয়নাল আবেদিন জয় (৪০), গাজীপুর, পুবাইল থানা, ভাধুন এলাকার মিজান সরকারের ছেলে এয়াছিন সরকার প্রকাশ হৃদয় (২৬), জামালপুর, মাধারগন্ডা থানার নয়াপাড়া এলাকার মৃত রহমত উল্যাহ প্রকাশ তাঁরামিয়ার কন্যা পারভিন আকতার লিমা (৩২) এবং গাজীপুর, জয়দেবপুর থানার নাউরুর এলাকার সুরুজ মাতবরের মেয়ে বিলকিস আকতার রুবি (২৫)।
আটকদের বরাত দিয়ে পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার ভোরে নিউ করলা প্রাইভেটকার (নং ঢাকা মেট্রো- গ ২৮- ৯৮২০) নিয়ে গাজীপুর থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওয়ানা দেয়। প্রথমে কুমিল্লার একটি ইট ভাটায় তারা ঢুকে বিভিন্ন অনিয়মের সংবাদ প্রকাশের হুমকি দিয়ে চাদাঁ নেয়। এরপর মিরসরাইয়ের করেরহাট এলাকায় অনুরূপভাবে অপর একটি ইট ভাটায় হানা দিয়ে চাদাঁ নেয়। বিকাল নাগাদ তারা হেয়াকো বিজিবি ক্যাম্পে প্রবেশ করে। সেখানে ফেনী, করেরহাট সড়কে একটি কাঠ বোঝাই গাড়ীতে টিবি চেক করার নামে এক হাজার টাকা আদায় করে।পরবর্তীতে হেয়াকো বেক বাজার নামক স্থানে কাঠ বোঝাই একটি গাড়ী থামিয়ে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে চাদাঁ নেয় চক্রটি।
আরও পড়ুন: করোনাভাইরাসের ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজি: ভুয়া সাংবাদিক গ্রেপ্তার
শান্তির হাট বাজার কমিটির সভাপতি আবুল হাসেম জানান, রাত ৮টায় তারা শান্তিরহাট বাজারে মো. তারেকের মালিকানাধীন মক্কা বেকারিতে প্রবেশ করে। দুই পুরুষ বেকারিতে ঢুকে কাগজপত্র খুঁজতে থাকে মালিকের কাছে। দু নারী সঙ্গী গাড়ীতে বসা ছিল। পুরুষরা নারীদেরকে সিনিয়র সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে তাদের নামে বেকারির মালিকের কাছে মোটা অংকের টাকা দাবি করে। না হয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের হুমকি দেয়া হয়। অগত্যা মালিক তারেক পাশের দোকানদারের কাছে টাকা হাওলাতের জন্য যায়। উক্ত ব্যবসায়ী কিসের জন্য টাকা দরকার বেকারির মালিক তারেকের কাছে জানতে চাইলে সে ঘটনা খুলে বলে। পরে ব্যবসায়িরা জড়ো হয়ে তাদের আটক করে দাতঁমারা পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের কাছে সোপর্দ করা হয়।
দাঁতমারা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ আতাউল হক বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তারা চার জন সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে এক বেকারী থেকে বিস্কিট কিনে টাকা না দিয়ে মালিকের কাছে বৈধ কাগজ পত্র দেখাতে বলে। পরে সমাধান করার কথা বলে টাকা দাবি করলে ব্যবসায়িরা তাদের আটক করে আমাদের ফাঁড়িতে খবর দেয়। আমরা তাদের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা নিজেদের দোষ স্বীকার করে এবং অনেক প্রতিষ্ঠান থেকে চাঁদা আদায়ের কথা স্বীকার করেছে।
তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।