পুলিশের পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) পরিচয়ে অটোরিকশার ভাড়া না দেয়া এবং পুলিশে চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখানোয় এক ভুয়া পুলিশকে গ্রেপ্তার করেছে বরিশাল মেট্রোপলিটনের বন্দর থানা পুলিশ।
আটক শামসুল আলম শাকিল (৩৭) কক্সবাজার জেলার টেকনাফ থানাধীন মধ্যম মহেষখালীয়া পাড়া এলাকার মো. আবুল হোসেনের ছেলে।
তার বিরুদ্ধে রবিবার বরিশাল সদর উপজেলার তালুকদার হাটের চাঁদপুরা এলাকার রাকিব তালুকদার (২৭) বাদী হয়ে সরকারি কর্মচারীর ছদ্মবেশ ধারণ ও মিথ্যা পরিচয় প্রদান করে প্রতারণার ধারায় বন্দর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
যে মামলায় আটক শামসুল আলম শাকিলকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান।
আরও পড়ুন: শরীয়তপুরে ইলিশ রক্ষা অভিযানে ৭২ জেলে আটক
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, বাদী ১৫ অক্টোবর রাত ৮টার দিকে বরিশাল সদর উপজেলার কর্ণকাঠী হিরণ পয়েন্ট থেকে অটোরিকশায় করে দিনারের পুল জিরো পয়েন্টের দিকে রওয়ানা দেয়। ওই অটোরিকশায় অন্য যাত্রীদের সঙ্গে মামলার আসামি গ্রেপ্তার হওয়া শাকিল উঠে এবং নিজেকে কোতোয়ালি মডেল থানার ইন্সপেক্টর (পরিদর্শক) পরিচয় দেয়। এরপর সে আসামি নিয়ে ভোলা যাওয়ার কথা বলে কিভাবে গেলে ভালো হয় তা জানতে চাইলে মামলার বাদী স্পীডবোটে গেলে ভালো হবে বলে জানায়।
এরপর পুলিশ কর্মকর্তা পরিচয়দানকারী শাকিল মামলার বাদীকে বলেন, ‘পুলিশে লোক নিচ্ছে, ৮ম শ্রেণি পাশ, এসএসসি পাশ এবং এইচএসসি পাশ, তুমি আমার নাম্বারটা নাও, তোমার কোন লোক থাকলে আমি পুলিশে চাকরি দিয়ে দিবো।’ এই কথা বলে পুলিশ কর্মকর্তা পরিচয়দানকারী শাকিল তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর বাদীকে প্রদান করে এবং বাদীকে পুলিশের নাম লেখা একটি খাকি খাম দেখায়।
এরপর রাত সাড়ে ৮টার দিকে অটোরিকশাটি জিরো পয়েন্টে পৌঁছায়। তখন অটোরিকশার চালক পুলিশ কর্মকর্তা পরিচয়দানকারী শাকিলের কাছে ভাড়া চাইলে, সে তা না দিয়ে উল্টো ড্রাইভারকে পুলিশ পরিচয় দেয়।
বিষয়টি নিয়ে বাদীর সন্দেহ হলে জরুরি সেবা ৯৯৯ এ কল করে। খবর পেয়ে কিছুক্ষণ পর বন্দর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শাকিলকে আটক করে।
বন্দর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রাফসান জনি জানান, পুলিশ পরিচয় দেয়া ওই ব্যক্তিকে তার কর্মস্থলের পরিচয় জিজ্ঞাসা করলে সে সন্দেহজনক কথাবার্তা বলে। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের পর সে নিজেকে ইন্সপেক্টর (পরিদর্শক) হিসেবে পরিচয় দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে।
আটকের সময় শাকিলের কাছ থেকে বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় লেখা পুলিশ পরিচয় ধারণের একটি খাকি রঙের খাম ও দুটি মোবাইল সেট উদ্ধার করা হয়।
বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, গ্রেপ্তার শাকিলের বিরুদ্ধে কক্সবাজারসহ বিভিন্ন থানায় একইভাবে প্রতারণার ঘটনায় আরও তিনটি মামলা রয়েছে।
সে মূলত ২০ টাকার অটোভাড়া না দিতে গিয়ে এভাবে ধরা পড়ে যাবে বুঝতে পারেনি।