দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির শ্রমিকদের দাবি মেনে নেয়ার প্রতিশ্রুতিতে চলমান আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত করেছে শ্রমিকেরা। পর্যায়ক্রমে কাজে যোগদানের সুযোগ পাবে তারা। শ্রমিকদের কাজে যোগ দেয়ার অংশ হিসেবে শনিবার ২১২ জন শ্রমিকের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে।
জানা গেছে, খনিতে কয়লা উত্তোলনে নিয়োজিত তিনটি চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিএমসি-এক্সএমসি এবং জেএসএমসি কনসোর্টিয়াম। এই তিন প্রতিষ্ঠানের অধীনে খনিতে কয়লা তোলার কাজ করছে স্হানীয় প্রায় ১১শ’ দেশি শ্রমিক। অতিমারি করোনার কারণে টানা দু’বছর ধরে চারশ’ শ্রমিককে খনিতে আটক রেখে কয়লা তোলা হলেও কাজ বঞ্চিত রাখা হয়েছিল সাতশ’ শ্রমিককে। এসময় ছুটিতে থাকা শ্রমিকদের সাড়ে চার হাজার করে কয়েক দফায় ভাতা পরিশোধ করা হলেও আট মাস ধরে ভাতা না পেয়ে মার্চ মাস থেকে আন্দোলনে নামে সুবিধা বঞ্চিতরা।
বড় পুকুরিয়া শ্রমিক কর্মচারি ইউনিয়নের সভাপতি রবিউল ইসলাম জানান, গেল শুক্রবার রাতে খনি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শ্রমিক নেতাদের মধ্যে ফলপ্রসু আলোচনা সাপেক্ষে ধাপে ধাপে শ্রমিকদের কাজে যোগদানের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
শর্ত অনুযায়ী শনিবার সকালে প্রথম দফায় ২১২ জন শ্রমিকের করোনা নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে যেসব শ্রমিকের নেগেটিভ আসবে তারাই শুধু খনিতে প্রবেশ করে এক সপ্তাহের কোয়ারেন্টিন শেষে কাজে যোগদানের সুযোগ পাবে।
আরও পড়ুন: বকেয়া বেতনের দাবিতে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির শ্রমিকদের বিক্ষোভ অব্যাহত
ধাপে ধাপে সপ্তাহে ২০০ জন করে মোট ৮৫০ জন শ্রমিককে পর্যায়ক্রমে খনিতে প্রবেশের অনুমতি দেবেন কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে করোনাকালিনে আট মাসের বকেয়া বেতন ভাতার দাবির বিষয়টি ঢাকায় পেট্রোবাংলায় শ্রমিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হবে।
বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি শ্রমিক কর্মচারি ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান জানান, শুক্রবার রাতের বৈঠকে আংশিক দাবি মেনে নিলে আন্দোলন প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এদিকে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী কামরুজ্জামান খান বলেন, ‘শুক্রবার রাতে শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে শনিবার ২১২ জন শ্রমিকের করোনা পরীক্ষা করানো হয়েছে। নেগেটিভ ফলাফলের ভিত্তিতে খনির অভ্যন্তরে প্রবেশ করে সাত থেকে ১০ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকার পর কাজে যোগদান করানো হবে।
অন্যদিকে পুরাতন ফেজের কয়লা ফুরিয়ে যাওয়ায় ‘বর্তমানে খনিতে কয়লা উত্তোলন বন্ধ করে নতুন ফেজের উন্নয়ন কাজ চলছে।’
উল্লেখ্য, খনির প্রবেশ পথ উন্মুক্ত করে সকল শ্রমিককে কাজে যোগদান এবং আট মাসের বকেয়া বেতন ভাতার দাবিতে গত দুমাস ধরে খনি এলকায় বিক্ষোভ সমাবেশ এবং খনির প্রবেশপথে অবস্থান গ্রহণসহ ধারাবাহিকভাবে নানান কর্মসূচি পালন করে আসছিল তারা।
আরও পড়ুন: বড়পুকুরিয়ায় কয়লা চুরি: ৬ সাবেক এমডিসহ ২২ জন জামিনে মুক্ত
বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে বিদ্যুতের সাবস্টেশনের ছাদ ধসে ২ শ্রমিকের মৃত্যু