মানিকগঞ্জের দৌলতপুরের পংতিরছা গ্রামে স্ত্রী ও আড়াই বছরের কন্যা সন্তানকে হত্যার দায়ে জাকির হোসেনকে মৃত্যুদণ্ড এবং তাঁর ছয় সহযোগীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। রবিবার বিকেলে মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক উৎপল ভট্টাচার্য্য এই রায় দেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০০ সালে পংতিরছা গ্রামের মেয়ে লিপা আক্তারের সাথে একই গ্রামের জাকির হোসেনের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের আড়াই বছরের মধ্যেই লিপার ঘরে জন্ম নেয় জ্যোতি আক্তার নামের এক কন্যা সন্তান। এরইমধ্যে জাকির পাশের বাড়ির চাচাত ভাইয়ের বউ তাহমিনার সাথে পরকিয়ায় জড়িয়ে পড়েন। এরপর থেকে জাকির স্ত্রীকে নির্যাতন করতে শুরু করেন। ২০০৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে পাশের বাড়িতে জাকির ও তাহমিনার অনৈতিক কার্যকলাপ ধরা পড়ে লিপার চোখে। এ নিয়ে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে জাকির লিপাকে গলা টিপে হত্যা করে এবং আড়াই বছরের শিশু কন্যা জ্যোতিকেও হত্যা করে অপর সহযোগী আসামি তাহমিনা, স্বপন, জাহাঙ্গীর, হাসান, আমীনুর ইসলাম, পারভেজ রানার সহযোগিতায়।
আরও পড়ুন: স্ত্রীকে এসিড নিক্ষেপ: স্বামীর মৃত্যুদণ্ড বহাল
এরপর লাশ পাশের বাড়ি থেকে এনে জাকিরের বাড়িতে রেখে ডাকাতির নাটক সাজায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠায়। ওই সময় জাকির পালিয়ে যায়। লিপার স্বজনদের বিষয়টি সন্দেহ হলে ২০০৫ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি তাঁর বাবা আবু হানিফ বাদী হয়ে দৌলতপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
পরে তাহমিনাসহ অন্যান্য আসামিদের ওই দিনই পুলিশ গ্রেপ্তার করেন। মামলায় ২৭জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণের পর যাবজ্জীবন পাওয়া আসামিদের উপস্থিতি ও জাকির হোসেনের অনুস্থিতিতে দীর্ঘদিন পর জাকির হোসেনকে ফাঁসি ও অন্যান্য ছয় আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন বিচারক।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন এডভোকেট মথুরনাথ সরকার।
আরও পড়ুন: পিরোজপুরে স্ত্রী হত্যার দায়ে যৌতুকলোভী স্বামীর মৃত্যুদণ্ড